দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সুনামগঞ্জের হাওরে আকস্মিক বন্যার ফলে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

আজ সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে হাওরে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রকল্প নিতে পারছি, এখনকার মতো এতে প্রকল্প কখনই নেওয়া হয়নি। সুনামগঞ্জের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। প্রকল্প ৫০ কোটির উপর হলে সমীক্ষার প্রয়োজন আছে। সুনামগঞ্জের জন্য প্রকল্প নিয়েছি ৪৯৪ কোটি টাকার। নদী খননের ১৫৪৭ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। একনেকে পাস হলে নভেম্বরে কাজ শুরু করব। আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। আগামী বছর থেকে এ সমস্যা হবে না। আগে এমন সমস্যা হয়নি।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগাম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আমাদের তিনটি স্থানে ভাঙন হয়েছে। ফসলের ক্ষেত্রে ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল উৎপাদন হয়। ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন।

তিনি বলেন, গত ১ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১২০৯ মিলিমিটার। প্রতি বছর আগাম বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকি, এবারও ছিলাম। অনেকে বলেছে কাজ দেরিতে হয়েছে। কাজ দেরির কারণ আমরা ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে ফেব্রুয়ারিতে শেষ করি। কিন্তু পানি জমে থাকায় সময়মতো কাজ শেষ করতে পারিনি। জানুয়ারিতে শুরু করেছিলাম, কাজটি শেষ পর্যায়ে ছিল। ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এ সময় উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, হাওরে আমি নিজে গিয়েছি। সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তবে আমি বলতে চাই এক্ষেত্রে কারো কোনো গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমানে সুনামগঞ্জ জেলার হাওরসমূহের বোরো ফসল আগাম বন্যা হতে রক্ষার্থে তদারকি ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধসমূহের মেরামত কাজ বাস্তবায়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলাভিত্তিক মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় বাপাউবোর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাওয়া বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলতি সপ্তাহে স্বাভাবিক থেকে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী ১০ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম (বরাক অববাহিকা) এবং মেঘালয় প্রদেশের স্থানসমূহে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, জাদুকাটা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালী, সোমেশ্বরী, ভুঘাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১ এপ্রিল, ২০২২)