আসামি ধরতে গিয়ে অসদাচরণ, ৯৯৯-এ ফোন, ৩ পুলিশ বরখাস্ত
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীতে আসামি ধরতে গিয়ে অপেশাদার আচরণের অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার তিন পুলিশকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে এক আনসার সদস্যকে নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। তাদের বরখাস্ত করার বিষয়টি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।
বরখাস্ত তিন পুলিশ সদস্য হলেন- যাত্রাবাড়ী থানার এসআই বিশ্বজিৎ সরকার, কনস্টেবল শওকত ও নারী কনস্টেবল নবনিতা।
ডিসি শাহ্ ইফতেখার আহমেদ বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রাবাড়ী থানার এক এসআই ও দুই কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এক আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাকে আনসার বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কামরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৯৯৯-এ ফোন দেওয়ার পর উল্টো যারা অভিযোগ করেছেন তাদেরই মামলা দিয়ে জেলে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়ে মারধর করে বহিরাগতরাও। এ ঘটনা ঘটে ৮ এপ্রিল। বাড়ির মালিক খায়ের আলমের বাড়ির মূল রাস্তায় দেয়াল তুলে দিতে বহিরাগতদের নিয়ে আসেন প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম। সাহায্য চেয়ে ৯৯৯-এ ফোন করার পর পুলিশ এসে উল্টো নুরুল ইসলামের পক্ষ নেয়। খায়ের আলমের বাসায় পুলিশের সঙ্গে ঢোকে বহিরাগতরাও। খায়ের আলমের সন্তানদের মারধর করে আটকের পর উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বাবা-মেয়ে জামিন পেলেও চিকিৎসক ছেলে এখনো কারাগারে। এ সুযোগে খায়ের আলমের বাড়ির মূল রাস্তা দেয়াল তুলে বন্ধ করে দিয়েছেন নুরুল ইসলাম ও তার ভাই। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে পানির সংযোগ। পানি ছাড়া অন্তত সাত দিন অমানবিক জীবনযাপন করছেন বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়া মিলে ১৬টি পরিবার।
তবে পুলিশ বলছে, ৮ এপ্রিল যাদের গ্রেফতার করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে, তারা একটি মামলার আসামি। পাশাপাশি দুটি বাড়ির মাঝের রাস্তা নিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে পাশের বাড়ির লোকজনের বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালে দুটি মামলা হয়। তাদের এই বিরোধ ২০ বছরের বেশি সময়ের। ৮ এপ্রিল সকালে বাড়ির দেয়াল তোলা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। যারা দেয়াল তুলেছেন তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি হয়েছে। কারণ সেখানে পঞ্চায়েত কমিটির লোক গিয়েছিল। ওই মারামারির মাঝে পড়ে পঞ্চায়েত কমিটির সেক্রেটারি আহত হন। একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকালে আবার দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। তখন ভিকটিম খায়ের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। ওই ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসামি আটক করতে গেলে ঘটনাটি ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেছে তা হলো, পুলিশ চার দেয়ালের মাঝে একজন আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে। তবে গ্রেফতারের সময় তার সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭ এপ্রিল, ২০২২)