নাহিদ হত্যা : ঢাকা কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থী রিমান্ডে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত নাহিদ হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ঢাকা কলেজের পাঁচ ছাত্রকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) তাদের ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর নাহিদ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের প্রত্যেককে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তার শুনানি শেষে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের ছাত্র আব্দুল কাইয়ূম ও পলাশ, সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্র ইরফান, বাংলা বিভাগের ছাত্র ফয়সাল ও ইতিহাস বিভাগের জুনায়েদ ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা সংঘর্ষে ঘটে যাওয়া দুটি হত্যা মামলার তদন্ত করছিলাম। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচ শিক্ষার্থীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এরপর তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৭ এপ্রিল) ডিবির পৃথক অভিযানে দুজন গ্রেফতার হয়। এরা হলেন ইমন ও কাইয়ুম। এদের মধ্যে ইমনকে ঢাকা কলেজ থেকে এবং কাইয়ুমকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত নাহিদ গত ১৯ এপ্রিল বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। একটি বড় ছাতা হাতে তাকে সংঘর্ষের একদম সামনে দেখা যায় অন্তত দুই ঘণ্টা ধরে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে ইটের আঘাতে আহত হয়ে সড়কে পড়ে যান নাহিদ।
এরপর তার ওপর নির্মম হামলা চালায় হেলমেটধারী কয়েক যুবক। নাহিদকে ওই সময় দুজন পরপর কোপায়। এর মধ্যে সবচেয়ে হিংস্র দেখা গেছে শনাক্ত হওয়া রাব্বীকে। রাব্বীর আগের হামলাকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। নাহিদ হত্যার পরদিন হাসপাতালে মারা যান দোকানকর্মী মুরসালিন। মুরসালিনকেও কুপিয়েছে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। মুরসালিনের হত্যাকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। রাব্বীর নাম জানা গেলেও অন্যদের নাম জানা যায়নি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, সব ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে; কয়েকজনকে শনাক্তও করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে। দুই মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও আবার পরদিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া সংঘর্ষের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮ এপ্রিল, ২০২২)