দেশে ফিরলেন হাজী সেলিম
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়েও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যেই দেশে ফিরলেন সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিটে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ঢাকার হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
আজ দুপুরে তার ব্যক্তিগত সহকারী মহিউদ্দিন বেলাল গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিমানবন্দরে নেমে একটি মাইক্রোবাসে করে হাজী সেলিম তার এলাকায় গিয়েছেন। সেখানে একটি জানাজায় তার অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
এর আগে গত শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ব্যাংককে যান ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হাজী সেলিম। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার প্রটোকল অফিসার সোহেল, চিকিৎসা সহযোগী মোহাম্মদ আলী এবং ব্যক্তিগত সহকারী মহিউদ্দিন বেলাল। তারা সবাই একটি গাড়িতে বিমানবন্দরে যান।
উচ্চ আদালতে সাজা হওয়ার পর আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার দেশে ফিরে আসা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামি কীভাবে ইমিগ্রেশন পার হলেন এটাই তো অস্বাভাবিক। তিনি বিদেশে যেতে পারেন না। উচ্চ আদালত তাকে বলেছেন বিচারিক আদালতে যেতে, তিনি চলে গেলেন বিদেশে!’
তবে সম্প্রতি মহিউদ্দিন বেলাল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘হাজী সেলিম পালিয়ে যাওয়ার লোক নন। তিনি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গেছেন। তার হাতে ৩০ দিন সময় রয়েছে। তিনি এই সময়ের মধ্যেই আদালতে হাজির হবেন। তিনি পালিয়ে দেশ ছেড়ে যায়নি। শিগগিরই দেশে ফিরবেন।’
হাজী সেলিমের ঘনিষ্ট ও একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিও এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন, আইনগতভাবে কীভাবে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তিনি সুবিধা পাবেন সেসব বিষয়ে কাগজপত্র ঠিক করছেন তার আইনজীবীরা।
ঘনিষ্ঠ সূত্রটি আরো জানায়, হাজী সেলিমের আরো কয়েক দিন পরে দেশে আসার কথা ছিল। তবে গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হওয়ায় তিনি দ্রুতই ফিরছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। পরে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেছিলেন উচ্চ আদালত। আপিল শুনানিতে তার সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগ তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৫ মে, ২০২২)