মাউশির কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রশ্নপত্র ফাঁস
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো। তারপর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দেশজুড়ে তা ছড়িয়ে যেত। এ নিয়ে এক পরীক্ষার্থী ও স্কুল শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসছে।
কঠোর অবস্থান এবং ধরপাকড়েও প্রশ্নপত্র ফাঁস থেমে নেই। সবশেষ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ৫১৩টি কম্পিউটার অপারেটর পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হলো। যাতে প্রায় পৌনে দুই লাখ চাকরি-প্রার্থী অংশ নেন।
গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অভিযানে ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে সুমন জোয়াদ্দার নামের এক চাকরি-প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছে পিলে চমকে উঠার মতো তথ্য পাওয়া যায়। পরীক্ষা শুরুর প্রায় ৪০ মিনিট আগেই হোয়াটসঅ্যাপে ৭০টি উত্তর পেয়ে যান। যা প্রবেশপত্রে লিখে নিয়ে আসেন।
সুমন জোয়াদ্দার বলেন, আমি পরীক্ষা দিতে যাই। তারপর আমার কাছে প্রশ্নের একটা শর্ট সল্যুশন আসে। আমি পড়ি। পড়ার পর সবগুলো আমার মনে ছিল না। যে কয়টা মনে ছিল না তা প্রবেশপত্রের পেছনে লিখেছিলাম।
এদিকে সুমনের ফোনে প্রশ্নের উত্তরগুলো পটুয়াখালীর খেপুপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম পাঠান। অভিযান চালিয়ে তাকেও গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার এক বড় ভাই শিক্ষা অফিসে চাকরি করেন, তিনি আমাকে দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে। এক বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়াও দু’জন উচ্চমান সহকারী আছেন এই চক্রে। তাদের মাধ্যমে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর কাছে পরীক্ষার আগেই উত্তর ছড়িয়ে পড়ে। প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত কাউকেই ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করতে হবে। এটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। যখনই পরীক্ষা হয়, তার আগে থেকেই এর পেছনে লেগে থাকি আমরা। অনেককে ধরতেও পেরেছি আমরা। আর যখনই পরীক্ষা হবে, ডিবির তৎপরতা থাকবে।
এছাড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর পরীক্ষা বাতিলের চিন্তার কথা জানালেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেন, ডিবির মাধ্যমে যদি কোনো তথ্য-প্রমাণ আসে তাহলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে রাঘব-বোয়ালদের নাম আসায় চাপের মুখে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছেন তারা।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৭ মে, ২০২২)