স্বেচ্ছাশ্রমের জন্য প্রেসিডেন্ট এচিভমেন্ট এওয়ার্ড পেলেন মোহাম্মদ এন. মজুমদার
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: কম্যুনিটিতে স্বেচ্ছাসেবায় অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জোসেফ আর বাইডেনের লাইফটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড পেলেন মূলধারার রাজনীতিক এবং কম্যুনিটি একটিভিস্ট বাংলাদেশী বংশোদভূত মোহাম্মদ এন. মজুমদার। গত ২৯ এপ্রিল এই লাইফটাইম এওয়ার্ডের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ কমিউনিটিতে সর্ব প্রথম এই এওয়ার্ডটি পেলেন মোহাম্মদ এন. মজুমদার।
প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষরিত এই সার্টিফিকেটটি বাংলাদেশি কম্যুনিটিতে সাড়া জাগিয়েছে। কারণ কম্যুনিটির জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দিলে যে আমেরিকার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তার স্বীকৃতি দেয়- এই এওয়ার্ড তার প্রমাণ। এ এওয়ার্ডটি ২০০৩ সাল থেকে তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ চালু করেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্বাক্ষরিত সম্মানজনক পত্রটি পাওয়ার পর বাংগালী কমিউনিটিতে আনন্দের বন্যা নেমে আসে। বাইডেন প্রদত্ত লাইফটাইম এচিভমেন্ট পত্রে লেখা- “With grateful recognition the americorps and the office of the President of the United States honor Mohammed N. Mujumder with the President’s lifetime achievement for their lifelong commitment to building a stronger nation through volunteer service.”
একজন বাংলাদেশী আমেরিকান হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য অনন্য সম্মান বয়ে এনেছেন এন. মজুমদার। প্রশংসা সুলভ এ কথাটিই এখন ব্রংক্সের কমিউনিটির বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। তিনি প্রমান করেছেন, কমিউনিটির জন্যে নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রম দিলে আমেরিকার সরকারী পর্যায় থেকে সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়া সম্ভব, এটাই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি মূলধারার একজন রাজনীতিক ও কমিউনিটি এক্টিভিস্ট।
মোহাম্মদ এন. মজুমদার ব্রংক্সের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তিনি তাঁর সতীর্থদের সহযোগীতায় ব্রংক্সের বাংলাদেশ কমিউনিটিকে নিয়ে গেছেন মূলধারায়।
বাংলাদেশ-আমেরিকা কমিউনিটি কাউন্সিল নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে তিনি যেমন কমিউনিটিকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছেন তেমনি নানা আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানকার বাংলাদেশীদেরকে উজ্জীবিত করে রেখেছেন। BACC’র মাধ্যমে তিনি এক যুগ আগে সিটির বিভিন্ন এজেন্সীকে নিয়ে সেখানকার বাংলাদেশীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে সার্ভিস ফেয়ার করেছেন।
মোহাম্মদ এন. মজুমদার ২০১০ সাল থেকে স্থানীয় কমিউনিটিতে বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। প্রতি সপ্তাহে এই বোর্ডে পাঁচ ঘন্টা স্বেচ্ছাশ্রম প্রদান করে গত ১২ বছরে তিনি পাঁচ হাজার ঘন্টারও বেশি স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছেন।
তিনি কমিউনিটি বোর্ডের সদস্য, ল্যান্ড এন্ড জোনিং কমিটির চেয়ারম্যান, ফাস্ট ভাইস-চেয়ারম্যান ও দুইবার ইন্টার্ণ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি পার্কচেস্টার কন্ডো বোর্ড, মজুমদার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি কাউন্সিল এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাজার ঘন্টা সময় দিয়েছেন কমিউনিটি সার্ভিসে। কোভিডকালীন খাদ্যসামগ্রী বিতরন, মজুমদার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলসামগ্রী ও উপহার সামগ্রী বিতরন, ইন্টারফেইথ ইফতার আয়োজন করেছেন। কমিউনিটিতে সংঘটিত অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকা একটি নামই হচ্ছে মোহাম্মদ এন. মজুমদার। জনহিতকর আরো বহু কাজের উদাহরনতো রয়েছেই।
গত ২৯ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জো আর বাইডেন মোহাম্মদ এন মজুমদারকে তাঁর স্বেচ্ছাসেবী কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ এ প্রেসিডেন্টস লাইফটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড প্রদান করেন। প্রসঙ্গত: মোহাম্মদ এন. মজুমদার বিগত ৩২ বছর মানবিক সেবামুলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। উল্লেখ্য আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জজ ডব্লিউ বুশ ২০০৩ সাল থেকে এই এওয়ার্ড প্রদান চালু করেন।
মোহাম্মদ এন মজুমদার নিউইয়র্ক টরো ল’ স্কুল থেকে এলএলএম ডিগ্রিধারী একজন প্রতিথযশা আইনজীবী। ইতোপূর্বে তিনি ফেনী ও চট্টগ্রাম বারের সদস্য ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিকালীন ফেনী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুরের কালিরহাট গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মোহাম্মদ হোসেন মজুমদার।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৭ মে, ২০২২)