১০ বছর আগে-পরে নাজমুল হাসানের একই প্রতিশ্রুতি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শব্দগুলো পুরোনো। পাশাপাশি বসে সেগুলো যখন বাক্য হয়ে গেলো, তাতেও নেই নতুনত্বের কোনো ছোঁয়া। ঘুরে ফিরে সেই একই কথা, সেই পুরোনো সুর, একই আক্ষেপ, সবশেষে চিরচেনা প্রতিশ্রুতি।
সরকারের মনোনয়নে ২০১২ সালের অক্টোবরে নাজমুল হাসান পাপন যখন বিসিবির সভাপতি হন, তখন থেকেই তার চ্যালেঞ্জ, ‘সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ ভালো, মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন টেস্টে।’
দশ বছর পেরিয়ে নাজমুল হাসান সেই একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে শোনালেন পুরোনো গান, ‘টেস্টে উন্নতি করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা পরিকল্পনা করেছি এবং সামনে দেখতে পাবেন, আমরা কী কী করেছি।’
এমন প্রতিশ্রুতিতেই পেরিয়ে যাচ্ছে তার তিন মেয়াদ। অথচ টেস্টে বাংলাদেশ আগেও যে অবস্থানে ছিল, এখনও সেখানেই। কালেভদ্রে যেসব সাফল্য আসছে সেগুলো সাময়িক আনন্দ দিলেও দীর্ঘমেয়াদে কোনো সুফল পায়নি বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা সিরিজে ব্যর্থতার পর মুমিনুল হক অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তার জায়গায় বসেছেন এর আগে দুইবার টেস্টে অধিনায়কত্ব করা সাকিব আল হাসান। তার থেকে বোর্ডের প্রত্যাশা যে আকাশচুম্বী তা নাজমুল হাসানের কথাতেই স্পষ্ট, ‘তিনটি ফরম্যাটের মধ্যে আমরা কেবল ওয়ানডেতে কিছুটা ভালো। যা কিছু সাফল্য, ওয়ানডেতেই। অন্য দুই ফরম্যাটে ভালো নই। শুধু টেস্টে নয়, টি-টোয়েন্টিতেও পারফরম্যান্স ভালো নয়। আমরা বলতে পারি না যে টি-টোয়েন্টিতে শক্তিশালী দল। আমরা যেটা করতে চাচ্ছি, পরবর্তী গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি টেস্টেই। টেস্টে উন্নতি করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা পরিকল্পনা করেছি এবং সামনে দেখতে পাবেন, আমরা কী কী করেছি।’
অথচ ২০১২ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি একই কথা বলেছিলেন,‘আমরা বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে দুর্বল। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আমরা ভালো। বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। ক্রিকেটকে দেশজুড়ে আরও জনপ্রিয় করতে হবে আমাদের এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্রিকেটার বের করে আনতে হবে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
এত বছর ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা পরিচালনা করার পরও কেন উন্নতি, পরিকল্পনা কথা আসছে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এক দশক পর সেই চ্যালেঞ্জের কথা মনে রাখেননি বোর্ড প্রধান, ‘না না… কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। আমি যখন এসেছিলাম তখন কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, কিছু বলার কথা নয়। আমি শুধু বলেছিলাম, এখানে পেশাদারিত্ব আনতে চাই, দায়বদ্ধতা ও শৃঙ্খলা, এই তিনটির ওপর জোর দিতে চাই। এছাড়া আর কিছুই বলিনি, প্রথম যখন এসেছিলাম।’
নাজমুল হাসান অতীত ভুলে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা করছেন। তিনি চাইছেন, ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ভালোমানের ক্রিকেটার এসে জাতীয় দলের পরিবেশ সুন্দর করে দিক। তার ভাষ্য, ‘এখন টেস্টে ভালো করতে গেলে যা যা করা দরকার, এই স্কোয়াড দিয়ে করাটা কিন্তু কঠিন। আপনাদের এই জিনিসটা বুঝতে হবে। ওরা যতদিন খেলে যাবে, এটার প্রভাব তো যাবে না। ঘরোয়া ক্রিকেটে এটার ধারা যদি চলতে থাকে, আমাদের বিকল্প অনেক বেড়ে যাবে। আমার ধারণা, আজ থেকে দুই বছর পরে দেখবেন অনেক পরিবর্তন, অনেক বদল।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ৩ জুন, ২০২২)