দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বে এপ্রিলের পর মে মাসেও কমেছে খাদ্যের দাম। এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও)। সংস্থাটি বলেছে, খাদ্যশস্য ও মাংসের দাম বাড়া সত্ত্বেও টানা দ্বিতীয় মাসের মতো মে’তে খাদ্যের দাম কমেছে।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় দেশে দেশে একের পর এক বিধিনিষেধ ও লকডাউনের কারণে পণ্য সরবরাহ ভেঙে পড়ে। ফলে নজিরবিহীনভাবে বেড়ে যায় খাদ্যের দাম। খাদ্যশস্য করোনার প্রকোপ কমে এলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে মার্চ মাসেই খাদ্যের দাম রেকর্ড গড়ে। তবে সম্প্রতি তা আবার কমতে শুরু করে।

আজ শুক্রবার (৩ জুন) খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও'র সবশেষ রিপোর্টে সে কথাই বলা হয়েছে। এফএ ‘র খাদ্যমূল্য সূচকে মে মাসে গড় পয়েন্ট হয়েছে ১৫৭.৪। যা আগের মাসে তথা এপ্রিলে ছিল ১৫৮.৩। তবে এপ্রিল মাসের তুলনায় মে’তে দাম কমলেও গত বছরের তুলনায় মাসটির সূচক এখনও ২২.৮ শতাংশ বেশি বলে জানানো হয়েছে।

খাদ্যশস্য সরবরাহ ও চাহিদা নিয়ে পৃথক অনুমানে এফএও বলছে, গত চার বছরের মধ্যে চলতি বছর তধা ২০২২-২৩ সালেই প্রথমবার বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমতে যাচ্ছে।

২০২১ সালের রেকর্ড ২.৮০ বিলিয়ন তথা ২৮০ কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল। তবে চলতি বছর উৎপাদন ওই বছরের চেয়ে এক কোটি ৬০ লাখ টন কমে ২৭৮ কোটি ৪০ লাখ টন কোটি টনে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত মাসে দুধ, চিনি ও উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য সূচকগুলো কমলেও মাংসের সূচক বেড়ে সর্বকালের রেকর্ড স্তরে পৌঁছে গেছে। খাদ্যশস্যের সূচকও বেড়েছে ২.২ শতাংশ। আগের মাসের তুলনায় মে’তে গমে মূল্য সূচকও ৫.৬ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ৫৬.২ শতাংশ।

এর কারণ হিসেবে এফএও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কথা বলেছে। কর্মকর্তাদের দাবি, সামরিক অভিযানের কারণে চলতি বছর ইউক্রেনে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কম হবে। ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞাও দামের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে বলে বলে মনে করা হচ্ছে।

এপ্রিলের তুলনায় গত মাসে উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য সূচক ৩.৫ শতাংশ কমেছে। এর পেছনে পাম তেল রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়া স্বল্প সময়ের জন্য যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা তুলে নেওয়াকে অন্যতম কারণ বলা হচ্ছে।

এফএও’র প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো কুলেন বলছিলেন, রফতানিতে বিধিনিষেধ বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। যার ফলে দাম বেড়ে যেতে ও দাম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও রপ্তানি সহজভাবে চলতে দেওয়া যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তেলবীজের দাম কমে যাওয়ায় সেটা স্পষ্ট।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ৩ জুন, ২০২২)