বিসিবি প্রধানের বিস্ফোরক মন্তব্যে তামিমের জবাব
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের মাটিতে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। এরপর আর এই ফরম্যাটে দেশের হয়ে খেলেননি দেশ সেরা ওপেনার। খেলেননি ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগ মুহূর্তে এক ভিডিও বার্তায় জানিয়ে দেন বিশ্বকাপে দল থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ার কথা। বিশ্বকাপ শেষে চলতি বছরের জানুয়ারির ২৭ তারিখে তামিম জানান, ৬ মাস ছুটি নিচ্ছেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে। যদিও তামিম জানিয়েছিলেন, দলের প্রয়োজন হলে ৬ মাস পর আবারও ফিরতে পারেন।
ছুটি নেওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান তামিমের সঙ্গে বসেছিলেন, অনুরোধ জানিয়েছিলেন ফেরার। তবে তামিম অনড়, খেলবেন না ৬ মাস। এই বাঁহাতি ওপেনার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর খেলবেন না এটা অনেকটা লুকানো সত্য। কিন্তু তামিমের নেওয়া ছুটির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি।
কিন্তু ছুটিতে থাকাকালীন সময়টাতেও তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থেমে নেই। এই যেমন গত ৫ জুন তামিম বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি ইস্যুতে তাকে বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কখনো গণমাধ্যম আবার কখনো বিসিবি থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে তাকে নিয়ে।
‘টি-টোয়েন্টি নিয়ে যে পরিকল্পনা আমার, আমাকে তো বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা বলে দেন, না হয় অন্য কেউ বলে দেয়। ওটাই চলতে থাকুক।’
তামিমের এমন মন্তব্যের জবাবে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, তামিম মিথ্যাচার করেছেন। ক্রিকবাজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাপন বলেছেন, ‘এটা একদমই মিথ্যা কথা (যে আমরা তামিমের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলিনি)। তাকে আমার বাসায় ডেকে চারবার টি-টোয়েন্টি খেলতে অনুরোধ করেছি। বোর্ডের অন্য সদস্যরাও তাকে অনুরোধ করেছে, সে বলেছে খেলবে না। এখন দেখেন কী বলছে।’
বোর্ড প্রধানের এমন মন্তব্য মানতে পারছেন না তামিম। সোমবার রাতে উইন্ডিজ সফরের উদ্দেশে রওনা করেছেন দলের সঙ্গে। এরই মাঝে ফেসবুকে পোস্ট করে তামিম জবাব দিয়েছেন বোর্ড প্রধান ও গণমাধ্যমকে।
ফেসবুক পোস্টে তামিম লিখেছেন, ‘আমার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি কথার সূত্র ধরে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বা মিডিয়ায় কিছু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে দেখতে পাচ্ছি। দুই দিন আগে একটি অনুষ্ঠানে আমি স্পষ্ট করে বলেছি, আমার ঘোষণা আমি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না, অন্যরাই নানা কিছু বলে দিচ্ছে। এখানে বোর্ড কমিউনিকেট করেনি বা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি, এ রকম কোনো কথা আমি একবারও বলিনি।’
‘বোর্ড থেকে কয়েকবারই আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে টি-টোয়েন্টি নিয়ে। আমি ৬ মাসের বিরতি নিয়েছি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে। এরপরও বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে কয়েক দফায়। এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আমি কখনোই তুলিনি।’
‘আমি সেদিন অনুষ্ঠানে যা বলেছি, আজকে আবার বলছি, টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার যে প্ল্যান, সেটা তো আমাকে বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা (মিডিয়া) বলে দেন, নয়তো অন্য কেউ বলে দেয়। তো এভাবেই চলতে থাকুক। আমাকে তো বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। এতদিন ধরে আমি ক্রিকেট খেলি, এটা ডিজার্ভ করি যে আমি কী চিন্তা করি না করি, এটা আমার মুখ থেকে শোনা। কিন্তু হয় আপনারা কোনো ধারণা দিয়ে দেন, নয়তো অন্য কেউ এসে বলে দেয়। যখন বলেই দেয়, তখন আমার তো কিছু বলার নেই।’
‘এটুকুই বলেছিলাম। এখানে কি উল্লেখ আছে যে কেউ যোগাযোগ করেনি? এ রকম কোনো শব্দ বা ইঙ্গিত আছে? খুবই সাধারণ ভাষায় বলেছি, আমার কথা আমাকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। ৬ মাসের বিরতি নিয়েছি, এর মধ্যেও মিডিয়া নানা কথা লিখে বা বলে যাচ্ছে, অন্যরাও কথা বলেই যাচ্ছেন।
বোর্ডের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নিয়মিতই আছে এবং তারা খুব ভালোভাবেই জানে, টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার ভাবনা কোনটি। আমি শুধু নিজে সেই কথাটুকু বলতে চাই, সেই সময়টুকু চাই।
সময় হলে আমার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই আমি জানাব। ৬ মাস হতে তো এখনও দেড় মাসের বেশি বাকি। কিন্তু সেই সময়টার অপেক্ষা কেউ করছে না। এটাই দুঃখজনক।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ৭ জুন, ২০২২)