জাহিদ বিপ্লব: যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার সময় আওয়ামী লীগ তিনদিনের হরতাল দিয়েছিল। পদ্মা সেতুর ব্যাপারে মানুষ কোন বাধা দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, জনগণ তাদের সাথে নেই। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ঢাকতে তারা ‘বেতাল’ হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চট্টগ্রামের সীতাকুুণ্ডে অগ্নিকান্ডে শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে শ্রমিকদল আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে সেতু হয়েছে। এই পদ্মাসেতু-ই দেশের একমাত্র সমস্যা নয়। আরো বহু সমস্যা আছে। এই পদ্মা সেতু আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দেয় না, গাড়ীর নিচে পড়ে মানুষ মরা বন্ধ করে না। রিজার্ভের সাড়ে ছয়’শ কোটি টাকা লুটপাটের বিচার হয়নি। ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে- তা ফেরত আনা হয়নি। শেয়ার মার্কেট থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা নাই-এর কোনো সমাধান হয়নি। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে- এসব সমস্যার সমাধান হবে না। যত কঠিন ও কঠোর হওয়া যায়, আমাদের হতে হবে। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতির বিষয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন 'আজকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য। আবার তারা তেল গ্যাসের দাম বাড়াবে। তার মধ্য দিয়ে মানুষের পকেট এমনিই ফাঁকা হয়ে যাবে।'

শ্রমিকদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। যারা নিম্নবর্তী মানুষ বিশেষ করে শ্রমিকরা যাদের বেতন বাড়তি নেই রেশন ব্যবস্থা নেই তারা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই আপনাদের এই দাবি আদায় করতে হলে সকল শ্রমিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে হয়তো দাবি আদায় করতে পারবেন। খণ্ড খণ্ড ভাবে আন্দোলন করলে তা আদায় করতে পারবেন না। কারণ মিল কল কারখানার মালিকরা আওয়ামী লীগের লোকজন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শ্রমিক সংগঠনগুলোকে বলব, আপনারা সীতাকুণ্ডে গিয়ে সরেজমিনে গিয়ে নিখুঁতভাবে দেখেন সেখানে কার কতটুকু অবহেলা ছিল। এই বিষয়গুলো জনসম্মুখে আনেন। শ্রমিকরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে নিশ্চয়ই জনগণ শ্রমিকদের দাবির পাশে দাঁড়াবে। খন্ড খন্ড দাবি নিয়ে এই সরকারের কাছ থেকে কোনো দাবি আদায় করা যাবে না। ‘এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি’ এই সোগ্লান তুলতে হবে। সরকার পতন ছাড়া জনগণ বা শ্রমিকের অধিকার আদায় হবে না।

তিনি আরও বলেন, গত রবিবার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, আবার তেলের দাম বাড়াবে। গ্যাসের দাম বাড়ালে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ে-এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। আবার আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট আসছে। দুর্নীতি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য করা হয়েছে। এ জন্য গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, আবার তেলের দাম বাড়াবে। এতে করে মানুষের ভোগ্যপণ্য শূণ্য হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ শ্রমিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৮ জুন, ২০২২)