মাহি হাসান, দ্য রিপোর্ট : দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু সুপারিশ ও দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট প্রত্যাশায় তাদের আশা প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো কার্যকর অবস্থায় দেখতে পারবেন এই বাজেটে। এ ব্যাপারে কথা পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমানের সাথে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট এই দুই ব্যক্তী মার্কেটের স্বাভাবিকতা রক্ষা করার পাশাপাশি মার্কেটের গতিশীলতা বাড়াতে কিছুক্ষন পরেই ঘোষনা হতে যাওয়া বাজেটে তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন দ্য রিপোর্টের কাছে।

ঢাকা স্টক একচেঞ্জ,চিটাগাং স্টক একচেঞ্জ, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক এসোসিয়েশনসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোজাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে ইতিপূর্বে নানা সুপাশি ও দাবি জমা দিয়েছে। নানা সুপারিশের মধ্যে অন্যতমপ্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা এটা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের দাবি। ৫ থেকে ১০ শতাংশ আয়কর প্রদানের মাধ্যমে এবং বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার পুঁজিবাজার যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করে তারা।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ৩০ শতাংশ রয়েছে। তবে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, ট্যোবাকো ইত্যাদি খাত এ আওতার বাইরে রয়েছে। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য কর রেয়াত ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৫ শতাংশ থাকা উচিত বলে তারা মনে করেন। বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মনে করেন মাত্র ৭ দশমিক ৫ শতাংশ সুবিধা মার্কেটে আনতে কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তুলে না। একই মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদেরও। এছাড়া পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের অন্যতম আরেক দাবী ডবল ট্যক্স প্রত্যাহার। বর্তমানেকর্পোরেট কর কর্তনের পর লভ্যাংশ দেওয়া হয়। লভ্যাংশ দেওয়ার সময় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে আবার লভ্যাংশ গ্রহীতার ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নের সময় তার ওপর প্রযোজ্য হারে কর দিতে হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ গ্রহণ না করে রেকর্ড তারিখের আগেই শেয়ার বিক্রয় করে দেয়, যা পুঁজিবাজারকে অস্থির করে তুলে। মার্কেটের স্বাভাবিক পরিস্থিতি নস্ট হয়। এভাবে কর প্রদান দ্বৈত কর নীতির আওতায় পড়ে। তাই আসন্ন প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো লভ্যাংশের ঘোষণার আগে সরকারকে অগ্রীম যে ট্যাক্স দিয়ে থাকে, সেটাকে চূরান্ত ট্যাক্স হিসাবে গণ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সাধারন বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যাশা আসছে বাজেটে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলোর কার্যকর করা হবে। যার মাধ্যমে দেশের শেয়ার মার্কেটের চলমান অস্থির অবস্থা স্বাভাবিক হবে। বাজারে ফিরে আসবে গতিশীলতা এমনটাই ধারণা বাজার সংশ্লিষ্টদের।