শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করের ব্যবধান বাড়াতে হবে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করের ব্যবধান বাড়াতে হবে বলে মত দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারারবাজারের তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হার কমানো হয়েছে। এতে করে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হারের পার্থক্য আগের মতই রয়েছে। যার কারণে বিদেশি এবং দেশি ভালো ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না। তাই করের এই ব্যবধান কমাতে হবে।
শনিবার (১১ জুন) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামে (ইআরএফ) জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, বিদেশি ভালো ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসতে হলে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করা প্রয়োজন। আমরা এটা নিয়ে প্রস্তাবও করেছিলাম। কিন্তু বিষযটি সে আলোকে আমলে নেওয়া হয়নি।
তারা বলেন, ব্যাংক এবং এনবিএফআইয়ের কর হার কমানো হয়নি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কর হার কমলে তারা সেই অর্থ বাবারও বিনিয়োগ করার সূযোগ তৈরি হতো। এতে করে তারল্য বৃদ্ধি পেত।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্টমামুনুর রশিদ এফসিএমএ উল্লেখ করেন, গত ৯জুন জাতীয় সংসসদে মাননীয় অর্থমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় বাজেটে ৪৩৩০০০ হাজার কোটি আয়ের বিপনীতে ৬৭৮০০০ হাজার কোটি ব্যয়সহ ২৪৫০০০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিসহ বাজেট উপস্থাপন করেন।করোনা পরবর্তী সময়ে এ বিশাল বাজেট অর্জন সরকারের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। আইসএমএবি বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওয়াতধীন প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসিবে সরকারের পাশে এ বাজেটে জিপিডি গ্রোথ ৭.৫% ধরা হয়েছে তা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে চায়।
আইসিএমএবি সভাপতি জানান, ভ্যাট বিধিমালা ২০১৬ মোতাবেক সিএমএ গণ বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে হিসাব ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ফিনান্সিয়াল অডিটের পাশাপাশি কস্ট অডিট বাস্তবায়নের দাবী জানান। যা পার্শ্ববর্তী ভারত সহ বিভিন্ন দেশে বাধ্যতামূলক করা হয়েছ। কস্ট অব গুডস সোল্ড স্টেটমেন্ট যদি কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টদের মাধ্যমে অডিট করা যায় তবে কস্ট ইফিসিয়েন্সি বাড়বে, খরচ কমবে এতে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, ট্যাক্সেস আপীলাত ট্রাইবুনালের প্রতি বেঞ্চে একজন করে বিচার বিভাগীয় সদস্য/ আইসিএমএবি’র সদস্য নিয়োগ দেয়ার বিধান চালুর দাবী জানান। ব্যক্তিশ্রেনীর সর্বোচ্চ করমুক্ত আয়সীমা ৪,০০,০০০ টাকা করার প্রস্তাব করেন। মহিলা ও ৬৫ বৎসরের উর্দ্ধে করদাতাদের সর্বোচ্চ করমুক্ত সীমা ৫,০০,০০০ টাকা করার প্রস্তাব শ্রেণীর করদাতার করেন।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা, শিল্পায়ন, ব্যবসা প্রসার ও পূজি বাজার উন্নয়ন, গার্মেন্টস্ সেক্টরে বিশেষ সুবিধা প্রদান, পরিবহন শিল্প এবং বিমান। পরিবহন শিল্পের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানসহ এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
এনবিআর এর ডিজিটাইজেশন, ট্যাক্স রিফর্ম, মহিলা উদ্যোক্তা এবং ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের প্রনোদনা, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে আরো প্রনোদনা প্রদান, স্বাস্থ্য প্রনোদনা, স্বাস্থ্য ইনসুরেন্স, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ভ্যাট ও ট্যাক্স এর হার সরল করা প্রয়োজন বলে মনে করেন আইসিএমএবি।
কর কাঠামোতে স্টার্টআপ সেন্ড বক্স একটি ভাল উদ্যোগ, এখানে নবীন উদ্যোগতাদের জন্য সকল ধরনের উদ্যোগকে সমান সুযোগ দেওয়া উচিত। যাতায়াত খরচ সকলের অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য যাতায়াত ভাতায় করমুক্ত সীমা ৩০,০০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬০,০০০ করা উচিত। বিনিয়োগ এর মাধ্যমে কর রেয়াত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে, বিনিয়োগের খাত সমূহ বৃদ্ধি করা উচিত, শেয়ার মার্কেট সকলে বোঝেন না, তাই ডিপিএস সীমা ৬০,০০০ থেকে বৃদ্ধি করে ১,২০,০০০ করা উচিত।
শ্রম আইন অনুসারে প্রদানকৃত ডব্লিউপিপিএফ খাতে খরচকে অননুমোদিত করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবেনা। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান এই খাতে খরচ প্রদানে অনিহা প্রকাশ করবে। ব্যাক্তি খাতে লভ্যাংশ আয়ের উপর কর্তনকৃত করকে চুড়ান্ত কর হিসেবে ধার্য্য করার ব্যাবস্থা করা, কারন এই খাতে আয়ের উপর কর কর্তনের প্রমান সংগ্রহ করা অনেক সময়েই সম্ভব হয়না এবং কষ্ট সাধ্য ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়, মাঠ পর্যায়ে করদাতাকে অনেক সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আইসিএমএবি এর সেক্রটারি এ.কে.এম. এফসিএমএ ও কোষাধ্যক্ষ মো. আলী। এছাড়ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুল ইসলাম কামরুজ্জামান হায়দার চৌধুরী এফসিএমএসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাজেটের উপর পেপার উপস্থাপন শফিকুল আলম অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের প্রিন্সিপাল অ্যান্ড সিইও মো. শফিকুল আলম এফসিএমএ।
(দ্য রিপোর্ট/মাহা/১১ জুন, ২০২২)