দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ঢাকা শহরে যেসব ব্যক্তির জায়গা-জমি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই ‘কালো টাকার মালিক’।তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যার জায়গা আছে, কিংবা যে ব্যক্তি জায়গা কিনেছেন তিনিই শুধু বলতে পারবেন, কত টাকায় রেজিস্ট্রি হয়েছে এবং জায়গার প্রকৃত বাজার দর কত। এজন্য সরকার দায়ী, আমাদের সিস্টেম দায়ী।

বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি অর্থনৈতিক ও ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়ালি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচার করা টাকা যখন দেশে ফেরত আসবে, আমরা মনে করি তখন সেটার একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ হবে। এ প্রত্যাশায় আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি।

পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ বিষয়ে কোনো চাপে আছেন কি না- জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, আমি কোনোভাবে চাপে নেই। আমি যা বলেছি তা আমি করবো। আমি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে আসি না। আমি যখন রেমিটেন্সের ওপর প্রণোদনা দিয়েছি তখন অনেক সমালোচনা ছিলো। বলা হয়েছিল টাকা আসবে না, কিছু হবে না, টাকা পাচার হবে। কিন্তু এসেছে, শুধু আসেইনি ঐতিহাসিক রেকর্ডও হয়েছে।

কালো টাকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় যাদের জায়গা-জমি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই কালো টাকার মালিক। এজন্য সরকার দায়ী, আমাদের সিস্টেম দায়ী। গুলশান এলাকায় কেনা কোনো জমির যে দাম দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়, জমির প্রকৃত দাম তারচেয়েও বেশি। কিন্তু বেশি দামে তো রেজিস্ট্রি করতে পারবেন না। প্রত্যেকটা মৌজার জন্য দাম ঠিক করে দেয়া আছে, এর বেশি দামে রেজিস্ট্রি করা যাবে না। সুতরাং যেটি পারা যাবে না, কালো টাকা তো সেখানেই হয়ে আছে। কে কালো টাকার বাইরে আছে?

তিনি বলেন, কিন্তু যখন বিদেশে পাচার হওয়া কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি তখন বলা হচ্ছে, সরকার নাকি কালো টাকাকে সাদা করার প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমি বারবার বলি অপ্রদর্শিত টাকা। এখানে লাজ-লজ্জার কিছু নাই। সরকার এজন্য দায়ী। আমিও একসময় দায়িত্বে ছিলাম। ঢাকা শহরে জমির দাম বাড়ানো যায় কি না, সেটা নিয়ে চিন্তা করলেও শেষ পর্যন্ত দাম বাড়াতে পারিনি। যে দাম ছিলো সে দামই আছে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, যে ফ্ল্যাট দুই কোটি টাকায় রেজিস্ট্রি হচ্ছে সেই ফ্ল্যাটের প্রকৃত দাম ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি রেজিস্ট্রেশন ফি পাচ্ছে না। এখানেই কালো টাকার উত্থান হচ্ছে। এ বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। ঢাকা শহরে যার জায়গা আছে কিংবা যে ব্যক্তি জায়গা কিনেছেন তিনিই শুধু বলতে পারবেন, কত টাকায় রেজিস্ট্রি হয়েছে এবং জায়গার প্রকৃত বাজার দর কত।

কালো টাকা ফেরত আনা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে আমরা কোনো আলাপ-আলোচনা করলে সেটি বস্তুনিষ্ঠ হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৫ জুন, ২০২২)