সাকিবের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি টাইগাররা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: অ্যান্টিগায় আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট। নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসন স্টেডিয়ামে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় প্রথম দিনের খেলা শুরু হবে। নাটকীয় কিছু না ঘটলে বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেট ভক্তরা খেলা দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের কাছ থেকে প্রচার স্বত্ব কিনে নেয়া টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিং (টিএসএম) এর সঙ্গে বাংলাদেশে যে প্রাইভেট চ্যানেলগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ সরাসরি টিভিতে সমপ্রচার করে, তাদের সিন্ডিকেটের একটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই মূলত ঝামেলার সৃষ্টি। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, তারা টোটাল স্পোর্টস মার্কেটিংয়ের কাছ থেকে ফিড নেবে না। তাই বাংলাদেশের দর্শকদের ঘরে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন না।
সাদা পোশাকের খেলায় বেশিরভাগ সময় একটু অন্ধকারই দেখে গিয়েছে বাংলাদেশকে। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে প্রায় ২২ বছরে ১৩২টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ১৬টি, ড্র করেছে ১৮টি এবং হেরেছে ৯৮টিতে। এর মধ্যে আটটি জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। চারটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। একটি করে জয় আছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকার বিপক্ষে।
ঘরের মাঠে সর্বশেষ সিরিজে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সফরে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট হারে দলটি। এই অবস্থায় মুমিনুল হককে সরিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছেন। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে আরেকটি অধ্যায় শুরু করছে বাংলদেশ ক্রিকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়েই সেটি শুরু হচ্ছে। দেশটিতে ২০১৮ সালের সর্বশেষ সফরেও টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন সাকিব।
সেইবার টেস্ট সিরিজটা একেবারেই ভালো কাটেনি সাকিবদের। দুই ম্যাচের সিরিজে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৩ রানে। এটি বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। ম্যাচটি ইনিংস ও ২১৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। ভয়ংকর এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল নর্থ সাউন্ডেই, যেখানে আজ বাংলাদেশ আজ দ্বিতীয়বারের মতো মাঠে নামছে। তবে ওই বার টেস্ট সিরিজ ২-০ হারলেও ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
তবে ২০১৮ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ সফরে এসে ঢাকা-চট্টগ্রামে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর আবার ২০২১ সালে দু’দলের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ২-০ তে সিরিজ হেরেছিল।
উইন্ডিজের মাটিতে সাদা জার্সিতে বাংলাদেশের একমাত্র সুখস্মৃতি ২০০৯ সালের সফর। সেবার তুলনামূলক দূর্বল এক উইন্ডিজ দলকে ২-০ সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাই ছিল দেশের বাইরে প্রথম কোনো টেস্ট সিরিজ জয়। সব মিলিয়ে উইন্ডিজের মাটিতে আটটি টেস্ট খেলে দুটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি ছয় ম্যাচের একটি ড্র হলেও, পাঁচটিতেই জিতেছে ক্যারিবিয়ানরা।
দু’দল এখন পর্যন্ত ১৮টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে চারটিতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১২টিতে এবং দুটি টেস্ট ড্র হয়েছিল।
এ ভেন্যুর সর্বশেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের পেসাররা মিলে নিয়েছিলেন ২৩ উইকেট। ব্যাটাররাও পিছিয়ে ছিলেন না দৌড়ে। নর্থ সাউন্ড দেখেছিল মোট চারটি সেঞ্চুরি। যদিও সেই টেস্ট ড্র হয়েছিল। তাই বাংলাদেশের মুস্তাফিজ-এবাদতরা আশাবাদী হতে পারেন। আর ওদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে নেই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। চোটের কারণে কেমার রোচের খেলা নিয়েও সংশয় আছে। তাই আলজারি জোসেফ-জায়ডেন সিলসদের সামলাতে পারলে তামিম ইকবাল-লিটন দাসদের জন্যও বড় রান অপেক্ষা করছে।
উইন্ডিজের মাটিতে সাদা পোশাকে বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। মোট চারটি টেস্ট খেলে ২৫৭ রান করার সঙ্গে উইকেটও নিয়েছেন ২১টি। তাই কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর ট্রামকার্ডও তিনি। বাংলাদেশী ব্যাটারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন তামিম ইকবাল। ছয় টেস্টে তার সংগ্রহ ৪২৭ রান। এবারো প্রস্তুতি ম্যাচে ১৬২ রান করে ব্যাটে শান দিয়ে রেখেছেন। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন লিটন দাসও। তবে দুই দলের বোলারদের মধ্যে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন কেমার রোচ। ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ২৯ উইকেট।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৬ জুন, ২০২২)