দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সড়কে গড় গতির হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির সড়ক রয়েছে পাহাড়ি দেশ ভুটানে। বিশ্বের ১৬২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান মাত্র তিনটি দেশের ওপরে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র।

গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সড়কপথে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় গড় সময় নির্ণয় করেন আইএমএফের কর্মীরা। এক্ষেত্রে যেসব শহরের দূরত্ব ন্যূনতম ৮০ কিলোমিটার কেবল সেগুলোই হিসাবে নেওয়া হয়, বাদ দেওয়া হয় নগররাষ্ট্রগুলোকে।

আইএমএফের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির সড়ক রয়েছে পাহাড়ি দেশ ভুটানে। তাদের গড় গতি ঘণ্টায় ৩৮ কিলোমিটার। এরপর নেপাল ও পূর্ব তিমুরের সড়কে গাড়ির গড় গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ও হাইতির সড়কে গড় গতি একই- মাত্র ৪১ কিলোমিটার।

দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কার সড়কে গড় গতি ৫০ কিলোমিটার, আফগানিস্তানে ৫৭ কিলোমিটার, ভারতে ৫৮ কিলোমিটার ও পাকিস্তানে ৮৬ কিলোমিটার। মালদ্বীপের প্রধান শহরগুলো সড়কপথে সংযুক্ত না হওয়ায় তাদের গড় গতি হিসাব করা হয়নি।

তালিকা অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গতি সম্পন্ন সড়কপথ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাদের গড় গতি ঘণ্টায় ১০৭ কিলোমিটার। এরপর পর্তুগাল, সৌদি আরব ও কানাডায় ১০৬ কিলোমিটার। ফ্রান্সে ১০৫ কিলোমিটার, স্পেনে ১০৩ কিলোমিটার, ওমানে ১০২ কিলোমিটার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সড়কে গড় গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।

এছাড়া উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির সড়কে গড় গতি ঘণ্টায় ৯৭ কিলোমিটার, অস্ট্রেলিয়ায় ৯৬ কিলোমিটার, তুরস্কে ৯৩ কিলোমিটার, মালয়েশিয়ায় ৯২ কিলোমিটার, আর্জেন্টিনায় ৯১ কিলোমিটার, যুক্তরাজ্যে ৮৭ কিলোমিটার, কুয়েতে ৮৫ কিলোমিটার, জিম্বাবুয়েতে ৮৩ কিলোমিটার, নিউজিল্যান্ডে ৮৩ কিলোমিটার, কাতারে ৮২ কিলোমিটার, জাপানে ৮১ কিলোমিটার, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৮০ কিলোমিটার, ইরাক ৭৯ কিলোমিটার, রাশিয়ায় ৭৬ কিলোমিটার, ইউক্রেনে ৭৫ কিলোমিটার, সুদানে ৭২ কিলোমিটার, ব্রাজিলে ৭২ কিলোমিটার, সিরিয়ায় ৭২ কিলোমিটার, মিয়ানমারে ৭১ কিলোমিটার, উগান্ডায় ৬৪ কিলোমিটার, ইয়েমেনে ৫৫ কিলোমিটার, ইন্দোনেশিয়ায় ৫৫ কিলোমিটার, ফিলিপাইনে ৫২ কিলোমিটার এবং ভিয়েতনামে ৫১ কিলোমিটার।

আইএমএফের গবেষণা বলছে, ভ্রমণকালের সঙ্গে সড়কের গুণগত মানের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তবে মাত্র একটি পরিসংখ্যানে রাস্তার গুণমান তুলে ধরা কঠিন। উদাহরণস্বরূপ- গতির হিসাবে রাস্তার নিরাপত্তা, ট্রেনের মতো বিকল্প পরিবহনের প্রাপ্যতা এবং পিক আওয়ার বা চূড়ান্ত মৌসুমে যানজটের (যখন কৃষকরা তাদের পণ্য বাজারে পৌঁছাতে একযোগে রাস্তায় নামেন) মতো বিষয়গুলো যোগ করা যায় না। তারওপর, বৈচিত্র্যময় ও বিরূপ ভূখণ্ডে মানসম্পন্ন রাস্তা নির্মাণের ইঞ্জিনিয়ারিং চ্যালেঞ্জগুলোও সম্পূর্ণরূপে তুলে ধরা সম্ভব হয় না।

তবু এই সাধারণ পরিসখ্যানটি নীতিনির্ধারক ও পরিকল্পনাকারীদের সমকক্ষ দেশগুলোর তুলনায় তাদের সড়কের মান মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ নির্মাণ খরচ নির্ধারণে সহায়তা করতে পারে। এটি দেশগুলোকে সড়কের প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং মানুষ ও পণ্য পরিবহন আরও দ্রুততর করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় উন্নতি করতেও সাহায্য করবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৭ জুন, ২০২২)