‘হাঁটুর নিচে দু-একটি কামড় খাওয়া ছাড়া খুব বেশি ইনজুরি নেই’
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করা আসিফ অনলাইন মাধ্যমেও জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। বছরজুড়ে শিল্পীরা যেখানে দেশ-বিদেশের স্টেজ শো-তে ব্যস্ত সময় পার করেন সেখানে মঞ্চে আসিফের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
এ প্রসঙ্গে আসিফ আকবর জানান, ‘২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একটা কনসার্ট করেছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাবিতে অধ্যয়নরত কুমিল্লার ছাত্রদের অনুরোধে প্রোগ্রামটা করেছিলাম। বর্তমান অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল ভাইও অংশ নিয়েছিলেন অনুষ্ঠানে। দেশে কনসার্ট করতে পারি না সরকারের ভালোবাসায়। ছোটখাটো গেট-টুগেদারে গেলে দুই-একটা গান গাই ভয়ে ভয়ে, অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস। শিল্পীর মূল ইনকামের জায়গা হচ্ছে স্টেজ, যেখানে আমি শুধুই দর্শক।’
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের প্ল্যান সেট শেষে পর্তুগাল, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, লেবানন আর অস্ট্রেলিয়ার শোগুলো ছিল এই জুন মাসে। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর জুড়ে ছিল আমেরিকা, কানাডা আর ইউরোপের দুটো দেশে শো। কুমিল্লার পুলিশ ডিপার্টমেন্টের নেগেটিভ রিপোর্টের জেরে পাসপোর্টটা আর পেলাম না শেষ পর্যন্ত। সবার কাছে মাফ চেয়ে ট্যুরগুলো বাতিল করেছি। আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করেছিলাম পারফরমেন্সের জন্য। এবার দেশে-বিদেশে আমার জন্য সব দুয়ার বন্ধ।’
গায়কের ভাষ্য, ‘সব মামলায় জামিনে আছি, কোনো মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত নই। সর্বোচ্চ ক্রিমিন্যাল হিসেবে আমি এখন দেশের ভাসমান নাগরিক। আমার দেশের তথাকথিত গীতিকার সুরকার শিল্পী সংঘের সদস্যরা আমার পাশে দাঁড়াবে না জানি। আমি তাদের কাছে ন্যুনতম সহমর্মিতাও প্রত্যাশা করি না। উটপাখির দলের একতা বালুর ঢিবির নিচেই শেষ হয়।’
আসিফ জানান, ‘আমার কোনো ব্যবসা নেই, শুধু রেকর্ডিংয়ের ওপর ভরসা করেই জীবিকা চলছে প্রায় একযুগের ওপর। আল্লাহর রহমতে হাঁটুর নিচে দু-একটি কামড় খাওয়া ছাড়া খুব বেশি ইনজুরি নেই। মাঝেমধ্যে অবশ্য মন বিচলিত হয়ে ওঠে। আকস্মিক হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে অসুবিধা নেই, ব্রেনস্ট্রোকে পঙ্গু হয়ে গেলে বিপদ। তবে কারও আর্থিক সাহায্য লাগবে না। সরকারি অনুদান নেওয়া আমার ব্যবসা নয়। আদালতের আশ্রয় নিতেই হচ্ছে, সেই সঙ্গে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণে সচেষ্ট হব। সরকারি সিস্টেমে আমিও সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণার মানুষদের মতো একজন বানভাসি। তবে হিংসা হয় রোহিঙ্গাদের কথা ভেবে, তারা কত আনন্দে আছে এই দেশে! দেশকে ভালোবাসি, ভালোবেসেই যাব। ইতিহাসে জালিমের অত্যাচারের গল্প পড়েছি, তাদের শেষ পরিণতি সম্বন্ধেও জানি। তাই নিজে শিকার হওয়াতে আরও বেশি গর্ববোধ করছি, এই সৌভাগ্য সবার হয় না। ভালোবাসা অবিরাম।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২০জুন, ২০২২)