বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত প্রথম টি-টোয়েন্টি
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সাদা পোষাকে হোক আর রঙিন পোষাকে হোক কিংবা লাল বল অথবা সাদা বল, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে এর কোনো পাথর্ক্য নেই। টপ অর্ডরের ব্যাটিংয়ে ব্যাপক পরিবর্তনের পরও ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ৫ বছর পর ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্কে আবার আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ফিরে আসার দিন বাংলাদেশের জন্য ছিল কালো মেঘে ডাকা। যদিও বৃষ্টি এসে খেলা শুরুর আগে থেকে আরম্ভ করে বাংলাদেশের ইনিংসে দুইবার বাঁধা সৃষ্টি করে। আর বাংলাদেশ ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রদশর্নী আরেকবার মঞ্চস্থ করে ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে ১০৫ রান করে। বৃষ্টির কারণে খেলা নেমে এসেছিল ১৬ ওভারে। কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসে দ্বিতীয় দফা বৃষ্টি আঘাত হানলে ১৩ ওভার পর আর বাংলাদেশ ব্যাটিং করতে পারেনি। সেখানেই ইতি ঘটে তাদের ইনিংসের।
উদ্বোধনী জুটিতে রান আসেনি। মাত্র ২ রানে ভাঙ্গন আসে সেখানে। কিন্তু ব্যাটিং পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে সিদ্ধ হস্ত ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। সাকিব ও এনামুল হক বিজয়ের আগ্রসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাটিং পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে সংগ্রহ করে ২ উইকেটে ৪৬। উইকেট দুইটি ছিল দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও এনামুল হক বিজয়ের।
ওপেনিংয়ে ভগ্নদশা কাটাতে বর্তমানে ল্যাব্রটরিতে মুনিম শাহরিয়াকে ঢুকানো হয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকের পর দুই ম্যাচেই ভালো করেত পারেননি। এবার সেই ব্যর্থতা টেনে এনেছেন দেশের বাইরে ডোমিনকাতেও। ৩ বলে ২ রান করে আকিল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে থমাসের হাতে ক্যাচ দেন। দলীয় রানও ছিল তখন ২। ৭ বছর পর আবার টি-টোয়েন্টিতে ফিরে দারুন সূচনা করেছিলেন এনামুল হক বিজয়। প্রথম বলেই আসে বাউন্ডারি। কিন্তু তিনিও বেশি দূর যেতে পারেননি। ১০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করে ম্যাককয়ের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন। বাঁচার জন্য রিভিউ নিয়েছিলেন এনামুল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। টেস্টের লিটন দাসকে খোঁজে পাওয়া যায়নি টি-টোয়েন্টিতে। শেফার্ডের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে নিকোলাস পুরানের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ২ বাউন্ডারিতে ১৪ বলে তিনি করেন ৯ রান। সাকিব আল হাসান ছিলেন শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক। খেলছিলেনও দারুণও। স্ট্রাইক রেট ছিল দুইশ বা তার উপরে। ১৪ বলে ২টি করে বাউন্ডারি ও ছক্কা মেরে ২৯ রানে গিয়ে আর এগুতে পারেননি। পরের বলে ওয়ালসের জুনিয়েরর বলে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন। ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। এই পর্যন্ত ভালোই ছিল। এ সময় বৃষ্টির কারণে ৭,৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৬০ রানের সময় বৃষ্টি আসলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির পর আবার খেলা শুরু হলে বাংলাদেশ তালগোল পাকিয়ে ফেলে। কেউ এসে উইকেটে থিতু হতে পারেননি। দ্রুত উইকেট পড়তে থাকে। ১৭ রানে হারায় আরও ৩ উইকেট। ৩.২ ওভারে ১৭ রানে বাংলাশে হারায় ৪ উইকেট।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ওয়ালস জুনিয়র তার অসমাপ্ত ওভারে আফিফ হোসেনকে কোনো রান করতে না দিয়ে আউট করেন। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে তিনি ব্রান্ডন কিংয়ের হাতে ধরা পড়েন। ওয়ালস জুনিয়রের মতো শেফার্ডও জোড়া আঘাত হেনে একই ওভারে ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ (৯) ও মেহেদি হাসানকে (১)। মাহমুদউল্লাহ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ওয়ালস জুনিয়রের হাতে এবং মেহেদি উইকেটের পেছনে থমাসের হাতে ধরা পড়েন। ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর নুরুল হাসান সোহান মারমুখি খেলে ১৬ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২৫ রান করে স্মিথের বলে ব্রান্ডেন কিংয়ের হাতে ধার পড়েন। আউট হওয়ার আগে স্মিথের সেই ওভারেই নুরুল হাসান দুই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। তিনি আউট হওয়ার এক বল পর আবার বৃষ্টি শুরু হলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ সময় বাংলাদেশের রান ছিল ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে ১০৫ রান। নাসুম ৭ ও শরিফুল ০ রানে অপরাজিত ছিলেন। উইন্ডিজের শেফার্ড ২১ রানে ৩টি, ওয়ালস জুনিয়র ২৪ রানে ২টি উইকেট নেন। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন আকিল হোসেন, ম্যাককয় ও ডেনস্মিথ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৩ জুলাই, ২০২২)