দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন শাসক বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের চার দফা ভোটের মধ্যে তিন দফার ভোট গণনার পরই তাঁর জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৃতীয় দফার ভোট গণনার পরই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোটের মাইলফলক অতিক্রম করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য দ্রৌপদী মুর্মু। এর আগে দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা পর্যন্ত মোট ভোটের ৪৫ শতাংশ পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যশোবন্ত সিনহার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিজেপির একসময়ের শীর্ষ নেতা যশোবন্ত সিনহা পেয়েছেন ২৭ শতাংশ ভোট।

দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৬ ভোট। দ্রৌপদী ইতিমধ্যে পেয়ে গেছেন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭টি ভোট। এখনো ভোট গণনা বাকি রয়েছে। ফলে তাঁর ভোট প্রাপ্তির সংখ্যা আরও বাড়বে। ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হবে ২৫ জুলাই। ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ওই দিনই শপথ নেবেন দ্রৌপদী মুর্মু।

পার্লামেন্ট হাউসে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ভোট গণনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গণনা শুরু হয় বেলা দেড়টা থেকে। যদিও বিজেপি আগে থেকেই দ্রৌপদী মুর্মুর বিজয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।

জয় নিশ্চিত হওয়ার পর নয়াদিল্লির ‘তিন মূর্তি মার্গে’ দ্রৌপদী মুর্মুর অস্থায়ী বাসভবনে গিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ছাড়া মুর্মুর জয়ের ঘোষণা আসার পর নয়াদিল্লিতে বিজেপির প্রধান কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের করে বিজেপির দিল্লি শাখা। এ ছাড়া বিজেপির সব রাজ্য শাখা মুর্মুর বিজয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগেই দ্রৌপদী মুর্মুকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোনো নারী প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ এবং এমন অনন্য উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান।

ওডিশায় দ্রৌপদী মুর্মুর নিজের শহর রায় রংপুরেও মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে বিজয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও বিজয় উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান আয়োজনেরও পরিকল্পনা রাখা হয়।

বিজেপি মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মুর্মু সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নারী। এর আগে তিনি ঝাড়খন্ড রাজ্যের গভর্নর ছিলেন। রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে একজন আদিবাসী নারীকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিরোধীদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে পেরেছে বিজেপি।

দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিরোধীরা দাঁড় করায় ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিজেপির একসময়ের শীর্ষ নেতা যশোবন্ত সিনহাকে। তাঁকে সমর্থন দেয় কংগ্রেসসহ ভারতের ৩৪টি বিরোধী দল। কিন্তু এসব দলের অনেক নেতা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে মুর্মুকে ভোট দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/২১ জুলাই,২০২২)