মাছ রপ্তানির প্রতি নজর দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নিজস্ব বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশে মৎস্য সম্পদ রপ্তানির প্রতি নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে আমাদের মাছের অনেক সুনাম ও চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন বাড়িয়ে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
তিনি বলেন, মিষ্টি পানির মাছ উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। সবচেয়ে নিরাপদ পুষ্টি পাওয়া যায় মাছ থেকে। যেটা মাংস থেকে হয় না। মাছের যে আবাসস্থল অর্থাৎ অভয়ারণ্য তৈরি করা- এগুলোর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পানির প্রবাহটা ভালো থাকা, পানি যাতে দূষণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। আমাদের যে চাহিদা সে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি মাছ আমরা এখন উৎপাদন করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাছের কাঁটা এভাবে নরম করতে পারলে যাতে আর কাঁটার সমস্যা না থাকে। ইলিশ মাছ একটু বেশি সময় লাগে কারণ সমুদ্রের মাছ। অন্যান্য মাছ আরও কম সময় হয়ে যায়। এটা হলো ঘরে। আমরা যদি এ ধরনের ইন্ডাস্ট্রি করতে পারি প্রেসার দিয়ে মাছের কাঁটাগুলো নরম করতে পারি যেন মাছ যেমন আছে তেমন থাকবে দেখতে, সেভাবে যদি আমরা স্ট্রিমজাত করতে পারি প্রক্রিয়াজাত করতে পারি এবং দেশে-বিদেশে রপ্তানি করতে পারি পৃথিবীর বহু দেশ এই মাছ নেবে অথবা মাছের তৈরি বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করতে পারব।
তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসীরা আছে যে যেখানেই থাকুক নিজের দেশের মাছ একটু খেতে চায়। আমরা তাদের সুযোগ করে দিতে পারি। ইতোমধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ পাস করেছি। গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, সমুদ্রসীমা আইন করে দিয়ে যান তিনি। জাতিসংঘ তখনও সমুদ্রসীমা আইন করেনি, জাতির পিতা করেছিলেন। পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মিলিটারি ডিক্টেটররা, সমুদ্রসীমায় যে আমাদের অধিকার আছে সেটা তারা জানত কি না তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা যখন প্রথমবার ক্ষমতায় আসি তখন খোঁজ-খবর নিয়ে সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার দাবি করি।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে যারা নানা সমালোচনা করছে তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যারা নাই নাই, গেলো গেলো, হায় হায় করে বেড়াচ্ছে এই হায় হায় পার্টি হায় হায় করতেই থাকুক। মাঝেমধ্যে তাদের একটু বলতে দিতে হবে। আমরা আমাদের কাজ করে যাই দেশ এগিয়ে যাক, দেশ এগিয়ে যাবে। জনগণের ওপর আমাদের ভরসা আছে, জনগণ আমাদের পাশে আছে ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছিল সে বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে বিশ্বকে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি যে বাংলাদেশ পারে। আমরাও পারি।
দেশের যুব সমাজকে মাছ উৎপাদনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি সেখানে যুবসমাজ এগিয়ে আসতে পারে। মৎস্য চাষে যুবসমাজ এগিয়ে আসলে নিজেরাও লাভবান হবে পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। মৎস প্রক্রিয়াতে সবাই আরও এগিয়ে আসুন।
মৎস্য চাষ ও মৎস্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এ বছর ২১ জন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২২ প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বর্ণপদক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২৪ জুলাই, ২০২২)