ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম ফোন কল রাশিয়া ও মার্কিন পররাষ্টমন্ত্রীর
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ইউক্রেনকে ক্রমাগত অস্ত্র সরবরাহ এবং রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ঘটনায় মস্কো চরম ক্ষুব্ধ। এরপর, প্রেসিডেন্ট বাইডেন মি. পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' বলার পর ক্রেমলিনের ভেতর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
দুই পরাশক্তির সম্পর্কে বিপজ্জনক এই ফাটলের প্রেক্ষাপটে শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে টেলিফোনে আধ ঘণ্টার মত কথা হয়। ২৪শে ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশ হামলা শুরুর পর এই প্রথম এত উঁচু পর্যায়ে দুই দেশে দেশের মধ্যে কথা হলো।
কিন্তু টেলিফোন আলাপ নিয়ে যে বিবৃতি দু পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, কথা মূলত হয়েছে রাশিয়ায় আটক দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তি নিয়ে।
ওয়াশিংটনে শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মি. ব্লিনকেন বলেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তার "খোলামেলা এবং স্পষ্ট" কথা হয়েছে এবং আটক দুই আমেরিকানের মুক্তির ব্যাপারে তার দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে তিনি।
রাশিয়ায় আটক এই দুই আমেরিকানের একজন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রাইনার এবং সাবেক একজন মার্কিন মেরিন সেনা এবং ব্যবসায়ী পল হুইলান।
দুবারের অলিম্পিক সোনা জয়ী মিস গ্রাইনারকে ১৭ই ফেব্রুয়ারি মস্কো বিমানবন্দরে মাদক বহনের অভিযোগে আটক করা হয়।
তাদের মুক্তির বিনিময়ে আমেরিকার প্রস্তাব সম্পর্কে মি ব্লিনকেন স্পষ্ট করে কিছু না বললেও বার্তা সংস্থা রয়টার্স নির্ভরযোগ্য সূত্র উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে তাদের দুই নাগরিককে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে মার্কিন সরকার অস্ত্র চোরাচালানের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে আটক রুশ নাগরিক ভিক্টর বাউটকে রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
এই বিনিময় প্রস্তাবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজী হয়েছেন কিনা জানা যায়নি, তবে তার অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে "অনুমান নির্ভর তথ্য" চালাচালি বন্ধ করে "ঠাণ্ডা মাথার কূটনীতির" পথে ফেরার জন্য আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
দুবারের অলিম্পিক সোনা জয়ী ব্রিটনি গ্রাইনারকে ১৭ই ফেব্রুয়ারি মস্কো বিমানবন্দরে মাদক বহনের অভিযোগে আটক করা হয়।
ব্রিটনি গ্রাইনার এবং পল হুইলানকে ছাড়িয়ে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এই দুই জনের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর বড় রকমের চাপ তৈরি হয়েছে। ।
ইউক্রেন নিয়ে যে কথা হয়েছে
মি. ব্লিনকেন জানিয়েছেন তিনি রুশ পরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন "সারা বিশ্ব দেখতে চায়" যে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানি নিয়ে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় করা চুক্তি যেন রাশিয়া মানে। "আমি পরিষ্কার করে বলেছি এ ব্যাপারে যেন যত দ্রুত সম্ভব অগ্রগতি হয়।"
এছাড়া, তিনি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সতর্ক করেছেন রাশিয়া যদি ইউক্রেনের পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলকে নিজের অঙ্গীভূত করার পথ নেয় তা কখনই "স্বীকৃত হবেনা" এবং তা করলে "রাশিয়াকে আরো কড়া মূল্য দিতে হবে।"
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, মি. লাভরভ মি. ব্লিনকেনকে বলেছেন আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার ফলেই বিশ্বে খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে, এবং খাদ্যকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখার প্রতিশ্রুতি আমেরিকা রাখছে না।
যুদ্ধ সম্পর্কে মি. লাভরভ বলেন, তাদের "বিশেষ সামরিক অভিযানের" লক্ষ্য রাশিয়া অর্জন করবেই, এবং পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহের ফলে সংঘাত শুধুই দীর্ঘায়িত হবে এবং ইউক্রেনের দুর্ভোগ ও এবং প্রাণহানি বাড়বে। দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/৩০ জুলাই,২০২২