আনারকলিকে প্রত্যাহারের ঘটনা ’বিব্রতকর’: শাহরিয়ার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনের উপপ্রধান কাজী আনারকলি মাদক রাখার অভিযোগে আটক হওয়ার পর তাকে ফেরত আনা হয়েছে।
বাসায় ‘মাদক পাওয়ার ঘটনায়’ ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনের উপপ্রধান কাজী আনারকলিকে ঢাকায় প্রত্যাহার করে আনার ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ও বিব্রতকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা এটা ইনভেস্টিগেট করছি। নিউজটা আমরা দেখেছি, নিউজটা শুধু দেখার বিষয় না, আমরা সেই কর্মকর্তার বিষয় কয়েক দিন আগ থেকেই জানি। আমরা তদন্ত করছি। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর।”
বাসায় ‘বিপুল পরিমাণ মারিজুয়ানা রাখার’ অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ায় আনারকলি আটক হওয়ার পর তাকে জাকার্তা থেকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
সেখানে বলা হয়, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ জাকার্তায় আনারকলির অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে আটক করা হলেও ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক দায়মুক্তির কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে ইন্দোনেশিয়া সরকারের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে এই কূটনীতিকের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “পররাষ্ট্র ক্যাডারের যে হাই স্ট্যান্ডার্ড, এটার সাথে আমরা কখনোই কমপ্রোমাইজ করব না। তদন্তে যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয়, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ বিষয়ে এটুকু বলতে পারি।”
কূটনৈতিক দায়মুক্তি থাকলেও আনারকলির বাসায় অভিযান চালানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এখানে কোনো ভুল নাই। এবং সেই বাসায় আরেকজন বিদেশি নাগরিক ছিল বলে আমরা শুনেছি। সেক্ষেত্রে পুলিশ যেতে পারে।
“তবে আমরা ধন্যবাদ জানাই ইন্দোনেশিয়া সরকারকে, তারা সহযোগিতা করেছেন আমাদের। এবং আমাদের ডিপ্লোম্যাট আমাদের কাস্টডিতে আছেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছেন। এটা আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। তবে আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি, এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। এবং সঠিক পথেই সেটা যাবে।”
মারিজুয়ানা উদ্ধারের ঘটনায় আনারকলির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আটক অন্যজন নাইজেরিয়ার নাগরিক বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।
এ ঘটনায় কোন প্রেক্ষাপটে সরকার ’বিব্রত’- এমন প্রশ্নে শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমাদের একজন কর্মকর্তা এটার মধ্যে ইনভলভড, এটাকে স্টোরি বলি বা ঘটনা বলি, বা ইনসিডেন্টই বলি, তিনি এটার মধ্যে ইনভলভড।
“তিনি নিজে করেছেন, না তার বন্ধু করেছে- সেটা পরে তদন্তে আসবে। কিন্তু পুরো জিনিসটা দুর্ভাগ্যজনক ও বিব্রতকর।”
কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনায় এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসার গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে তাকে ফেরত আনা হয়েছিল।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওই রাজ্যে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ছিলেন ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের এই কর্মকর্তা।