অতিরিক্ত সময়ে হার বাংলাদেশের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিনিয়র নারী অথবা পুরুষ— নিকট অতীতে কেউ পারেনি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিততে। তবে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের যুবাদের সামনে। ৯০ মিনিট দুর্দান্ত লড়াই করে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর পথেই ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় বাংলাদেশের।
আজ শুক্রবার রাতে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধ ও দ্বিতীয়ার্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে বাংলাদেশের যুবারা। প্রথমে পিছিয়ে পড়ে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে শেষ করে প্রথমার্ধের লড়াই। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ২-২ গোলের সমতা নিয়ে শেষ করে ৯০ মিনিট।
প্রথমার্ধের শুরুতে গোল করে ভারতকে এগিয়ে নেন গুরকিরাত সিং। আর প্রথমার্ধের শেষ দিকে বাংলাদেশের রাজন হাওলাদার গোল করে সমতা ফেরান।
ফাইনালে ম্যাচের ২০ সেকেন্ডেই এগিয়ে যায় ভারত। এ সময় ভারতের হিমাংশু জাংগ্রা ডি বক্সের বাইরে থেকে গোলপোস্টে আচমকা শট নেন। সেটা ঠিকভাবে ধরতে পারেননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক মো. আসিফ। বল সামনে চলে আসে। সেটাতে কিক নিতে যান ভারতের গুরকিরাত সিং। আর আসিফ আসেন ধরতে। তার পায়ে লেগে ভূপাতিত হন গুরকিরাত, মালদ্বীপের রেফারি হুসাইন সিনান পেনাল্টির বাঁশি বাজান।
পেনাল্টি থেকে গুরকিরাত গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। এটা ছিল চলতি আসরে তার পঞ্চম গোল। ৫ গোল নিয়ে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে আছেন। বাংলাদেশের মিরাজুল ইসলাম ৪ গোল নিয়ে আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
দশম মিনিটে বাংলাদেশ সমতা ফেরাতে পারতো। কিন্তু ডি বক্সের বাইরে থেকে রফিকুল ইসলামের নেওয়া শট পোস্টে লেগে বাইরে চলে যায়। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা এগোয়।
তার মধ্যে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে (৪৫ মিনিটে) সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশের রফিকুল ইসলাম ডানদিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন। ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে শট নেন। বল ভারতের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে চলে আসে রাজনের কাছে। রাজন জটলার মধ্য থেকে ডান পায়ে শট নিয়ে বল জালে জড়িয়ে সমতা ফেরান। তাতে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে শেষ হয় প্রথমার্ধের লড়াই।
৫৯ মিনিটে সমতা ফেরায় ভারত। এ সময় ডি বক্সের মধ্য থেকে বাংলাদেশের মো. তানভীর হোসেন হেড দিয়ে বল ক্লিয়ার করেন। সেটা পেয়ে যান বক্সের সামনে ভারতের গুরকিরাত। ডান পায়ের জোরালো শট জালে আশ্রয় নেয়। চলতি আসরে এটা ছিল তার ষষ্ঠ গোল। আর এই ম্যাচে দ্বিতীয়।
৬৭ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ভারত। এ সময় হিমাংশুর নেওয়া শট গোলরক্ষক আসিফ ধরতে ব্যর্থ হন। বল জালে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। এমন সময় গোললাইনের ওপর থেকে সেটা ক্লিয়ার করেন বাংলাদেশের মো. আজিজুল হক অনন্ত।
৬৯ মিনিটে বাংলাদেশের মো. নাহিয়ান বামপ্রান্ত থেকে আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু গোলপোস্টের সামনে কেউ না থাকায় গোল হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ৫-২ গোলের ব্যবধানে ফাইনাল জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। আর রানার্স-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলাদাতা ও মোস্ট ভ্যালুয়াবল প্লেয়ারের পুরস্কার পান ভারতের গুরকিরাত। সেরা গোলরক্ষক হন ভারতের সোম কুমার। আর ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড পায় ভারত।