পাপনের বাসায় সাকিব বিষয়ে আলোচনার সারমর্ম
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: এমনভাবে গুলশানের ‘আইভি’র লিগাসি’ বিল্ডিংয়ে ঢুকেছিলেন যেন কেউ না বুঝতে পারে! বিএমডব্লিউ ছেড়ে টয়োটা এক্সিও গাড়িতে আসবেন তা কেউ ভাবেও-নি। হাতে কফির কাপ নিয়ে বিষণ্ন সাকিব আল হাসানের লিফটের পথে এগিয়ে চলা স্তম্ভিত পরিবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছিল।
ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় কি হবে তা আঁচও করা যাচ্ছিল। কিন্তু বিশাল ড্রয়িংরুমে আলোচনায় বসে সাকিব সেই পরিবেশকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। যার প্রমাণ পাওয়া যায় ঘণ্টা দেড়েক পরই।
একই পথে যখন বেরিয়ে এলেন তখন সাকিবের মুখে রাজ্য জয়ের হাসি। দুই হাত কোমড়ে রেখে র্যাম্প মডেলদের মতো ক্যাটওয়াক করতে করতে লিফট থেকে বেরিয়ে আসেন। চোখে-মুখে ছিল হাসির ঝিলিক। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে থাকেন। সবশেষে ফ্লাইং কিস দিয়ে বেরিয়ে যান। ব্যাস! তাতেই বোঝা হয়ে যায়— বেট উইনারের ম্যাচটা সাকিবই জিতেছেন।
বেটিং সাইট বেট উইনারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেট উইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আজ শনিবার দুপুরে নাজমুল হাসানের বাসভবনে দেখা করেন সাকিব। আলোচনায় বসে সাকিব শুরুতেই নিজের ভুল স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, মিস গাইড হয়ে বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। তার এমন বক্তব্যে নাজমুল হাসান বিরক্তি প্রকাশ করলেও পরিস্থিতি বেশি ঘোলাটে হয়নি।
বরং সাকিবকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বের প্রস্তাব দেওয়া হলে তা লুফে নিয়ে দল নিয়ে নিজের পরিকল্পনা, লক্ষ্য এবং দল কেন্দ্রীক আলোচনাতে সবাইকে ব্যস্ত রাখেন। দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন এবং টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন নানা ইনপুট দিয়ে আলোচনায় প্রাণ আনেন।
তবে সাকিব নিজের যতটা না ভুল, তার বিজ্ঞাপনী এজেন্সি ও বেট উইনার প্রতিষ্ঠানের দায়টায় বেশি দিয়েছেন। জালাল ইউনুস সরাসরি বলেছেন, ‘হ্যাঁ সাকিবের কাছে মনে হয়েছে সে মিস গাইডেড।’
সাকিব এবারও বিসিবির নিয়ম ভেঙে ছাড় পেয়ে গেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সামনে এশিয়া কাপ, নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টগুলোতে ভালো করলে তার সকল অপরাধ ঢেকে যাবে আবারও। বিসিবি আপস কেন করছে সেই প্রশ্নও উঠেছে আবার?
জবাবে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘সাকিব এখনও আমাদের সেরা খেলোয়াড়। আমরা তাকে আমাদের বলেই দাবি করি। সে আমাদের বোর্ডের বা দেশের বাইরের কেউ না। সে যখন বলেছে যে, সে ভুল করেছে, আমরা ধরে নিয়েছি পরবর্তীতে এরকম ভুল আর হবে না। তাকে বলা হয়েছে, এই রকম ভুল যেন সে আর পুনরায় না করে। সে আশ্বাস দিয়েছে, আমাদের বোর্ড সভাপতির সামনে, আমরা সেটা মেনে নিয়েছি। সেখানে আমরা বিষয়টি শেষ করে দিয়েছি।’
তবে বিতর্কে জড়ানো সাকিবের নতুন কিছু নয়। এর আগে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বিসিবির অনুমতি না নিয়ে। সিপিএল খেলতে গিয়েছেন অনাপত্তিপত্র না নিয়ে। এগুলো হরহামেশাই হয়েছে। বিসিবিও কখনো তাকে শাস্তি দিয়েছে, কখনো দেয়নি। দলের সেরা খেলোয়াড় বলেই বিসিবির অসহায়ত্ব বারবার ফুটে ওঠে।