সরকারী গোয়েন্দার সাথে বিএনপি কিছু নেতার আঁতাত রয়েছে-গয়েশ্বর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আঁতাতের কথা জানতে পেরেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেছেন, বিএনপির কেউ কেউ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, ‘আকাশে বাতাসে’ নানা কথা ভেসে বেড়াচ্ছে।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ভোট বর্জনের ঘোষণার পরও বিএনপি গতবারের মতোই ভোটে অংশ নিতে পারে।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন: ইভিএম মেশিন ও আজকের গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর। জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১ নামের একটি সংগঠন এই সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগ পর্যন্ত মানুষ বিশ্বাস করত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এক শ্রেণি বিশ্বাস করছে নির্বাচনে কীভাবে যায় আবার আরেক শ্রেণি মনে করছে নির্বাচনে যাবে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন কথাবার্তা, যেটা পর্দার অন্তরালে… এখন আমরা যারা বসে আছি তাদের মধ্যে কে কোন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি, সেটা চিন্তার বিষয় না। এবং আমাদের রাতের অন্ধকারে কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কাকে কী আসনের নিশ্চয়তা দিতেছে, কাকে টাকা দিতেছে, এগুলো আমাদের জানা নাই।
‘এই কথা যাচাই করা বা প্রমাণ করার সুযোগ নাই, তবে আকাশে বাতাশে এই কথাগুলো ভাসতেছে। কিন্তু জনগণের সন্দেহ যেটা রয়েছে এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে হবে রাজপথের আন্দোলনে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের কেউ কেউ বিশ্বাস করবে আগামী নির্বাচনে আমাদেরকে আশ্বস্ত এবং বিশ্বাস তৈরি করার জন্য সরকার আর কোনো ঝুট ঝামেলা করবে না। যারা এই কথা বিশ্বাস করে, তারা আওয়ামী লীগকে চিনে না। আওয়ামী লীগ যা করে তার উল্টোটা করে।
‘আওয়ামী লীগের কথা শোনা, তাদের কথার উত্তর দেয়া আর তাদের স্বীকার করে নেয়া সমান। তাই আমরা কী করব, আমাদের কী করা উচিত সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা বলেছিলাম এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, খালেদা জিয়া মুক্তি না হলে নির্বাচন নয়। আমরা শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে থাকি নাই। খালেদা জিয়া এখনও মুক্তি হন নাই। …বিএনপি এখন বলছে নির্বাচনে যাবে না। পরে যদি আবার যায়, এই সংশয়টা কাটিয়ে উঠার দায়িত্ব আমাদের। আমাদের কর্ম, কর্মপদ্ধতি, আন্দোলনের কর্মসূচিতে আমাদের আন্তরিকতা- এর মধ্যেই নির্ভর করে জনগণের মাঝে আস্থাটা ফিরিয়ে আনা।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার নির্দেশকে আমাদের দলের অনেক নেতা বিশ্বাস করেছেন। তাহলে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে সেখানে তাদের জীবন কেন দিল?
‘তারপরও আমাদের কোনো কোনো নেতা বলেন, সরকার বিদেশিদের চাপে আমাদের কর্মসূচিতে ঝামেলা করছে না। দুইটা প্রাণ কেড়ে নিল, তারপরও বলছে ঝামেলা করছে না।’
আলোচনা সভার আলোচ্যসূচি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন গয়েশ্বর। বলেন, ‘আজকে দেশে গণতন্ত্র নাই, তাই গণতন্ত্রের আলোচনা হয় না। আর আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই সরকারের অধীনে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাব না। এইটা বারবার আমাদের নেতৃবৃন্দের মুখ থেকে এটা উচ্চারিত হচ্ছে। সকল নেতাকর্মীরা এতে বিশ্বাস করে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। সুতরাং যেখানে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, সেখানে ইভিএম নিয়ে কোনো কথা নয়।’
তিনি বলেন, ‘আজকেই পেক্ষাপটে সরকারের পতন এবং এর কৌশল নির্ধারণ তার প্রস্তুতি এবং কী কী কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো যায় সেই আলোচনা হওয়াই উচিত। এবং এটি আমাদের জন্য বেশি জরুরি।