দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। দলের প্রধান হিসাবে তিনিই এখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বালমোরাল ক্যাসেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস।

তার আগেই রানির কাছে পদত্যাগপত্র দেন বিদায়ি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পরে বাকিংহাম প্যালেস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জনসনের পদত্যাগপত্র সাদরে গ্রহণ করেছেন রানি এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ট্রাসকে সরকার গঠনের অনুমতি দিয়েছেন।

বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে খুবই সাবধানতার সঙ্গে যাতে কোনো প্রধানমন্ত্রী না থাকার সময়টা বেশিক্ষণ না হয়।

রানির অসুস্থতার কারণে ব্রিটেনের ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষমতা হস্তান্তরের এ বৈঠকগুলো লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসের পরিবর্তে স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে হয়েছে।

লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় অর্ধেক নাগরিক হতাশ : ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে লিজ ট্রাস নির্বাচিত হওয়ায় দেশটির অর্ধেক নাগরিক হতাশ হয়েছেন।

সোমবার প্রকাশিত ‘ইউগভ’-এর জরিপ ফলাফল এ তথ্য দিয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এবং তিনি দেশের মন্ত্রিসভা গঠন করবেন-এ কথা জেনে ব্রিটেনের অর্ধেক মানুষ হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এ ছাড়া, দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ‘গভীর হতাশা’ প্রকাশ করেছেন। শতকরা মাত্র চার ভাগ মানুষ ‘খুবই সন্তুষ্টি’ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া শতকরা ১৮ ভাগ মানুষ মোটামুটি খুশি।

ব্রিটেনে জীবনযাত্রার ব্যয় যে মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে লিজ ট্রাস সক্ষম হবেন কি না, তা নিয়ে শতকরা ৬৭ ভাগ মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ইউগভের আরেকটি জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ বলেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ওপর তাদের কোনো রকমের আস্থা নেই।

জনসনের বিদায়ি ভাষণ : বালমোরাল ক্যাসেলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগপত্র দেওয়ার আগে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিদায়ি ভাষণ দিয়েছেন বরিস জনসন।

সেই ভাষণে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে ব্রেক্সিট সফল করেছেন এবং দ্রুততম সময়ে ব্রিটিশ নাগরিকদের কাছে কোভিড টিকা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান ছাড়াও শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নিজ সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন জনসন।

বরিস বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জ্বালানি সংকট দিয়ে ব্রিটেনের জনগণকে ব্ল্যাকমেইল বা শাসাতে পারবেন না। টোরি সরকার জনগণকে অবশ্যই এই সংকট কাটিয়ে উঠবে।

বিদায়ি ভাষণে জনসন নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে সমর্থন করার কথাও বলেন। নতুন সরকারের জন্য জোরালো সমর্থন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সমস্যা থেকে উতরে যাওয়ার জন্য লিজ ট্রাসকে সমর্থন দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

কারা থাকছেন ট্রাসের মন্ত্রিসভায় : সদ্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা। জানা গেছে, কনজারভেটিভ দলের সাবেক কর্মকর্তা ফুলব্রুককে লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে।

মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন ট্রাসের সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা রুথ পোর্টার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় লিজ ট্রাসের মিডিয়াবিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা অ্যাডাম জোনস মন্ত্রিসভায় থাকতে পারে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।