সেনাবাহিনীতে রিজার্ভ সৈন্য ডেকে পাঠানোয় বিক্ষোভ
রাশিয়ায় শত শত নাগরিককে গ্রেফতার
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে রিজার্ভ সৈন্য ডেকে পাঠানোয় দেশব্যাপি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করায় শত শত নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে রসদ ও সরঞ্জাম সরবরাহে ব্যর্থতার অভিযোগে রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
জেনারেল দিমিত্রি বুলগাকোভকে নতুন দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ওভিডি-ইনফো নামের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার রাশিয়ার ৩২টি শহরে ৭২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
ধারণা করা হয়, রাশিয়া তাদের প্রায় ১৯০,০০০ জন নিয়মিত সৈন্য ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য মোতায়েন করেছে।
কিন্তু ভ্লাদিমির পুতিনের ওই ঘোষণার পর থেকেই রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করা নিষিদ্ধ।
এরপরেও রাশিয়ার শহরগুলোজুড়ে বড় আকারের বিক্ষোভ চলছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কারণে এক হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সেন্ট পিটার্গবার্গে একজন ব্যক্তি সাংবাদিকদের বলেন, ''পুতিনের জন্য আমি যুদ্ধ করতে যেতে চাই না।''
মস্কো নতুন যে আইন করেছে, তাতে সেনাবাহিনীতে একবার নাম লেখানোর পর পালিয়ে গেলে বা দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
শনিবার একটি ডিক্রি জারি করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন, যেখানে বলা হয়েছে, কোন সৈন্য যদি আত্মসমর্পণ করে, সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে যায় অথবা যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া এড়াতে হাজার হাজার তরুণ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ড সীমান্তে দেশত্যাগের জন্য দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।
তবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী, ব্যাংকার আর গণমাধ্যমকর্মীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অপসারণ
জেনারেল দিমিত্রি বুলগাকোভকে সরিয়ে রাশিয়ার সরবরাহ ব্যবস্থা তদারকির নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কর্নেল জেনারেল মিখাইল মিযিনস্তভকে, যিনি মারিওপোলে রাশিয়ান বাহিনীর নিষ্ঠুর অবরোধ পরিচালনা করেছিলেন।
দুই হাজার আট সাল থেকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সরবরাহ ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল বুলগাকোভ। দুই হাজার পনের সালে সিরিয়ায় রাশিয়ার সৈন্যবাহিনী মোতায়েন করার পর থেকে তিনি সেখানে রসদ সরবরাহ ব্যবস্থা তদারকি করতেন।
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মস্কোয় অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর যে সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক বিপর্যয় ঘটেছে, সেজন্য অনেকে তাকে দায়ী করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নতুন গোলাবারুদ এবং ড্রোনের জন্য দীর্ঘদিনের মিত্র উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের সহায়তা চাইতে বাধ্য হয়েছে মস্কো।
রাশিয়ায় নতুন যোগ দেয়া সৈন্যদের হাতে বাতিল রাইফেল তুলে দেয়া হচ্ছে, এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হলো।
জেনারেল মিযিনস্তভের নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়ার কঠোরপন্থীরা।
অনেক ইউক্রেনিয়ান জেনারেল মিযিনস্তভকে 'মারিওপোলের কসাই' বলে বর্ণনা করে থাকেন।
সেখানে তার ভূমিকার জন্য তার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।
সিরিয়ার রাশিয়ার অভিযান চালানোর সময় তিনি বোমা হামলা করে আলেপ্পো শহরকে প্রায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট /টিআইএম/২৫ সেপ্টেম্বর ,২০২২)