দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মাইডাস ফাইন্যান্সের অভ্যন্তরে সংঘটিত দুর্নীতি নিয়ে ২৭ ফর্মার ৪৩২ পৃষ্ঠার একই ব্যতিক্রমী একটি বই আসছে। বইটি লেখার কাজ শেষে শুরু হচ্ছে ছাপার কাজ। এই বইটিতে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে সংঘটিত দুর্নীতি, দুঃশাসন, কূটকৌশলসহ নানা বিষয় থাকবে। বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক প্রশাসন, মানবসম্পদ ও এস্টেট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান শামীম আহমেদ।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে শামীম আহমেদ এসব কথা বলেন। এসময় হাবিব উদ্দিন নামের একজন আমানতকারী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ৭৪ পৃষ্ঠার একটি পুস্তিকা ‘দুর্নীতি, দুঃশাসন, কূটকৌশল পেক্ষিত: মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড’ উন্মোচন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০০৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছর মাইডাস ফাইন্যান্সে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু বেতন পেয়েছি সাড়ে ৭ বছরের। তারপরও সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ১৫ মাসে চাকরি ফিরে পেতে কোম্পানি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৫০টি আবেদন জমা করেছি। কিন্তু অদ্যাবধি কোনও নির্বাহী দপ্তর বা সংশ্লিষ্ট বিভাগে থেকে আমাকে চাকরি ফিরে পেতে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুল আযম ও পর্ষদ সদস্য সামছুল আলমের বিরুদ্ধে নিজ নামে ঋণ অনুমোদন, জাল-জালিয়াতি, দুর্নীতির প্রমাণ নষ্ট করতে ঘুষ প্রদান, নারী কেলেঙ্কারি, বেতন-ভাতা ম্যানিপুলেশন, মাদক কারবার ও কোম্পানির গাড়ি-বাড়ি দখলসহ বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। এ ছাড়া বর্তমান কোম্পানির সচিব তানভীর হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা কূটকৌশলের অভিযোগ আনেন শামীম আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় ধ্বংসের পথে প্রতিষ্ঠানটি। বিনিয়োগ নেই, আশানুরূপ আমানত নেই, রিকভারী নেই। নন পারফর্মিং ঋণ ৫০ শতাংশ। ঋণ বিতরণ করার মত পর্যাপ্ত ফান্ডও কোম্পানির নিকট নেই। এই প্রক্রিয়ায় হাজার হাজার আমানতকারী ও বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। এসব অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডার, বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের জানানো নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে। এসব অপকর্মে জড়িতদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। তাই বিষয়টি জনসম্মুখে আনতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তবে যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায় গত জুন শেষে প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ১৯ শতাংশ, আর এই তথ্য অস্বচ্ছ।

শামীম আহমেদ বলেন, ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও যোগসাজশ করার কারণে বিতরণকৃত অর্থ ফেরত আসছে না। এ অবস্থায় আমানতকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। আমানতের টাকা ফেরত পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তদারকি না হলে এক সময়ের মর্যাদার এই প্রতিষ্ঠানটি পিপলস লিজিংয়ের অবস্থা বরণ করবে। এর মাধ্যম বিপুল সংখ্যক আমানতকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে। প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারী হিসাবে তিনি নিজেও উদ্বিগ্ন বলে জানান।