বিজয়া দশমীতে আজ প্রতিমা বিসর্জন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শারদীয় দুর্গাপূজায় বুধবার (৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের সুর। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় এ উৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় এ উৎসবের শেষ দিনে সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় করছেন ভক্তরা।
দুর্গাপূজা উৎসবের শেষ দিনে প্রতিমাগুলোকে বরণ করে নারীরা সিঁদুর খেলার জন্য ভিড় করছেন সেখানে। এরপর আরেকবার পূজা শেষে বিসর্জন দেয়া হবে প্রতিমাগুলোকে।
মহানবমীর দিনে মঙ্গলবারও (৪ অক্টোবর) রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোতে ছিল ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা অঞ্জলি ও ভোগ দিয়েছেন। নবমী পূজা ও সন্ধ্যা আরতি শেষে বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করে প্রতিটি মণ্ডপে। বিজয়া দশমীতে বুধবার ভক্তরা বিদায় নেবেন দেবী দুর্গাকে।
জানা গেছে, বিসর্জনের দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীর বিহিত পূজা এবং পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন। দুপুর ১২টায় রয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান। বিকেল ৪টায় রয়েছে বিজয়া শোভাযাত্রা।
বিজয়া দশমীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কারণ, দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটি বছর।
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী জানা যায়, এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বেরোবে বিকেল ৪টায়। এর আগে রাজধানীর ২৪১টি পূজামণ্ডপের অধিকাংশই এসে সমবেত হবে পলাশীর মোড়ে। সেখান থেকে সম্মিলিত বাদ্যি-বাজনা, মন্ত্রোচ্চারণ ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিজয়ার শোভাযাত্রা। সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীর জলে একে একে বিসর্জন দেওয়া হবে প্রতিমা।
গতকাল ছিল মহানবমী। মা দেবী দুর্গাকে বিদায়ের আয়োজনে বিষণ্ণ মন নিয়েই উৎসবে মেতেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। দিনটির প্রধান আকর্ষণ ছিল মণ্ডপে মণ্ডপে আরতি প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যা ও রাতকে উজ্জ্বল করে ভক্তরা মেতে উঠেছিলেন নানা ঢঙে, আরতি নিবেদনে। তবে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে আয়োজনে ঘটে কিছুটা ছন্দপতন। দুপুর ২টা ৪ মিনিটে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ দেশের অর্ধেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ চলে যায়। তবে তাতে পূজা উদযাপনে ছেদ পড়েনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার।