অনীকের প্রদর্শনী
"আলোকচিত্রে নশ্বরতা"
রেজাউর রহমান: " বৃক্ষের মতন হও, মরা পাতাগুলো ঝরে যেতে দাও।" ধরণীর সৃষ্টি রহস্যের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ক্ষণ বা সময়। এই নশ্বরতার মতন এত স্বার্থপর আর কিছু হয় না মনে হয়।নিজেকে প্রবাহিত করে কিন্তু নিষ্ঠুরতম উপায়ে,প্রবাহিত করে সিমার হয়ে।এই ক্ষণ উপলব্ধিগত,বিমূর্ত, শুধু বহমান কোন প্রাচীন বাতাসের মতন স্পর্শ করা য়ায়। এই স্পর্শ কখনো আন্দোলিত করে কখনো নুইয়ে দেয়।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে কলাকেন্দ্রে শুরু হয়েছেঅনীক মুস্তফা আনোয়ারের ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী। আজ শেষ দিন।
আলোকবর্ষ দূরের আলোকে যন্ত্রের কৌশলে কাজে লাগিয়ে তরুণ আলোকচিত্রী অনীক মুস্তফা আনোয়ার ক্ষণকে স্থায়ী রূপে ফ্রেমে ধরেছেন এবং আমাদের সামনে এনে কাউকে অতীতে, কারও অতীতকে বর্তমানে রূপান্তর ঘটিয়েছেন। অনিক তরুন হলেও গল্পবলার ভাষা কিন্তু বয়োজ্যেষ্ঠ। প্রথাগত আলোকচিত্রীর ভাষায় অনিক গল্পের রুপকার নন,তিনি খুব অন্তর্গত দিনলিপি বা ব্যবহার্য বিষয় কে ক্ষণের একমহা স্মৃতিময় স্থানে রেখেও এই গল্পকে ছন্দময়তার দিকে নিয়ে গেছেন।
খুব নান্দনিক আলোক বিন্যাস বা সৌন্দর্যের দিকে অনিকের দৃষ্টি তা মনে হচ্ছে না, বিষয়বস্তুুর নিগূঢ়তম সময়কে ধরতে চাইছে অনিক, ক্লিক এমনই ঈঙ্গিত দিচ্ছে।
শহুরে বন,পুশকার মেলা, বা বাংলা চলচ্চিত্রের হারিয়ে যাওয়া সময়কে গল্পের মত করে আলোকচিত্রের মাধ্যমে অর্থবহ করে তুলছেন অনিক।
কলা কেন্দ্রর প্রতিটি দেওয়ালে ক্ষণকে সামনে এনে ক্ষণস্থায়ী রূপকে দক্ষভায় সুবিন্যাস্ত করেছেন অনীক।
" বিধাতার রাজ্যে ভালো জিনিস অল্প হয় বলেই তা ভালো, নইলে সে নিজের ভিড়ের ঠেলায় হয়ে যেত মাঝারি"
অনীকের আলোকচিত্র গুলোর বিন্যাস দেখলে তাই মনে হয়।
অনীকের ভাবনা কাব্য, মহাকাব্যে রূপ নিবে আলোকবর্ষ দূর থেকে আনা আলোকরশ্মিগুচ্ছের মাধ্যমে। আমরা তাকিয়ে থাকবো তার নতুন কোন আলোকিত স্বপ্নের প্রত্যাশায়।
(দ্যা রিপোর্ট/একেএমএম/ ১০ অক্টোবর,২০২২)