বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ , সুপার সাইক্লোনের সম্ভাবনা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চলতি অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের প্রথম দিকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থেকে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রগুলো সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস কিংবা আবহাওয়াবিদরা এ ব্যাপারে এখনই কোনো পূর্বাভাস বা মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না।
ঢাকা আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেছেন, “অক্টোবরের মাসব্যাপী পূর্বাভাসে একটি ঝড়ের কথা বলা হয়েছে কিন্তু তা কখন সংঘটিত হবে তা বলার সময় এখনো আসেনি। এখনো বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ুর প্রক্রিয়া রয়ে গেছে। মৌসুমি বায়ুর প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।”
এদিকে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল বলছেন, “সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এর নাম হবে সিত্রাং। তিনি আমেরিকান আবহাওয়ার মডেল পূর্বাভাসকে উদ্ধৃত করে বলেন, “মডেল পূর্বাভাস হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস (১০ অক্টোবর দুপুর ১২টার মডেল পূর্বাভাস) অনুসারে, ২০ অক্টোবরের পর বঙ্গোপসাগরের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি সিত্রাং সুপার সাইক্লোন হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড় আমফান ২০২০ সালে ২১ মে স্থলভাগের যে স্থানে আঘাত হেনেছিল সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং প্রায় একই স্থানে আঘাত হানতে পারে বলে নির্দেশ করছে আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলে।”
সুপার সাইক্লোন আমফান ছিল একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়। এটা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি সংঘটিত হলে তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুচাপ ৯৪১ মিলিবার পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। সে কারণে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। এই গতিবেগে উপকূলে আঘাত করলে ঘূর্ণিঝড় সিডরের সমান ক্ষয়-ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সকাল বেলা ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানে। বাতাসে এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। এ কারণে সাফির-সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী একে ক্যাটেগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় আখ্যা দেয়া হয়। এই ঝড়ে কমপক্ষে তিন হাজার ৪৪৭ জন মানুষ মারা যায়।
মোস্তফা কামাল বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি যেখানেই আঘাত হানুক সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, এটি একটি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে। সে কারণে আগে থেকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রাখা উচিত।”