৫৭ জেলা পরিষদে জিতলেন যারা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশের ৫৭ জেলা পরিষদ ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টায় ইভিএমে শুরু হওয়া ভোট চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। কারচুপি কিংবা হট্টগোল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে ছিল। গণনার পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করেছে।
পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে আব্দুল হান্নান শেখ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চশমা মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। তিনি ২৮৩ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমান। তিনি ২৩১ ভোট পেয়েছেন।
সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তেঁতুলিয়া উপজেলায় আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলায় রুবেল ইসলাম, আটোয়ারী উপজেলায় বাবু কমলেশ চন্দ্র ঘোষ, দেবীগঞ্জ উপজেলায় আক্তার হোসেন নিউটন এবং বোদা উপজেলায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আব্দুর রহমান।
দুটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে আক্তারুন্নাহার সাকি এবং তানজিনা ইয়াসমিন নির্বাচিত হয়েছেন।
মেহেরপুর
মেহেরপুর জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রসুলকে ৬১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
আজ দুপুরে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল সালাম (কাপ-পিরিচ) প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৭৬। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুল (আনারস) পেয়েছেন ১১৫ ভোট।
এ নির্বাচনে তিনটি উপজেলায় তিনটি ভোট কেন্দ্রে ২৯৩ জন ভোটারের মধ্যে শতভাগ ভোট পোল হয়েছে।
আব্দুস সালাম কাপ-পিরিচ প্রতীকে ১৭৬ ভোটের মধ্যে সদর ভোট কেন্দ্রে ৫৬ ভোট, গাংনী ভোট কেন্দ্রে ৮৪ ভোট এবং মুজিবনগর কেন্দ্রে ৩৬ ভোট পেয়েছেন।
একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম রসুল আনারস প্রতীকে ১১৫ ভোটের মধ্যে মেহেরপুর সদর ভোট কেন্দ্রে ৪৮ ভোট, গাংনী ভোট কেন্দ্রে ৪৮ এবং মুজিবনগর ভোট কেন্দ্রে ১৯ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর পদে ১নং ওয়ার্ডে (মেহেরপুর-মুজিবনগর) শামীম আরা হিরা বিজয়ী হয়েছেন। সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডে (গাংনী) বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন শাহানা ইসলাম শান্তনা। সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বর পদে ১নং ওয়ার্ডে (মুজিবনগর) আজিমুল বারী মুকুল, ২নং ওয়ার্ডে (মেহেরপুর সদর) ইমতিয়াজ হোসেন মিরন এবং ৩নং ওয়ার্ডে (গাংনী) মিজানুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন।
মেহেরপুর জেলার ২০টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভা ও ৩টি উপজেলা পরিষদ মিলে মোট ভোটারের সংখ্যা ২৯৫ জন। এর মধ্যে দুই জন ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন। শতভাগ ভোট পোল হলেও সদরে চেয়ারম্যান পদে ২টি ভোট বাতিল হয়েছে।
মাগুরা
মাগুরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পংকজ কুমার কুণ্ডু বিজয়ী হয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওলিউল ইসলাম জানান, বেসরকারি ফলাফলে আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পংকজ কুমার কুণ্ডু পেয়েছেন ৩৫২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীয়াতুল্লাহ হোসেন মিয়া ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৩০ ভোট।
সদর, শ্রীপুর, শালিখা, ও মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩, পুরুষ সদস্য পদে ২০ জন ও মহিলা সদস্য পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মাদারীপুর
মাদারীপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুনীর চৌধুরী। তবে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ইভিএমের ভোটে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে রাজৈর উপজেলায় সাধারণ সদস্য পদে মামলা সংক্রান্ত ঝামেলায় নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
সাধারণ সদস্য পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলায় সদস্য পদে মহিউদ্দিন খান নাঈম, কালকিনি উপজেলায় রফিকুল ইসলাম, ডাসার উপজেলায় মীর মামুন, শিবচর উপজেলায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইলিয়াস পাশা।
এছাড়া সংরক্ষিত সাধারণ সদস্য পদে সদর, কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় হয়েছেন মোসা. রোকসানা পারভীন ও শিবচর-রাজৈর উপজেলায় আয়শা সিদ্দিকা মুন্নী।
মাদারীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল মামুন জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নৌকার প্রার্থী মুনীর চৌধুরী নির্বাচিত হন। এছাড়া সদর উপজেলায় সদস্য পদে ২ জন, কালকিনিতে ২, ডাসার ৪, রাজৈর ২, শিবচর উপজেলায় সাধারণ সদস্য পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো. ইলিয়াস হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনে সদর, কালকিনি ও ডাসার উপজেলা থেকে ৫ জন এবং রাজৈর ও শিবচর উপজেলা থেকে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজৈর উপজেলায় সদস্য পদে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম ১৬১ ভোটে জয়লাভ করেছেন।
সাতক্ষীরা জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ভোট গণনা শেষে ১ হাজার ৫৯টি ভোটের মধ্যে নজরুল ইসলাম মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬০৮ ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী খলিলুল্লাহ চিংড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৪৭ ভোট।
সাতক্ষীরা জেলা রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ১২টি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ১ হাজার ৫৯ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র একজন ভোট দানে বিরত থাকেন।
তিনি আরও জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৫৯ জন, যারমধ্যে প্রদত্ত ভোটারের সংখ্যা ১ হাজার ৫৫ জন।সুনামগঞ্জ
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬১২ ভোট।
এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল কবির রুমেন ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬০৪ ভোট।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৭৯ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৫৩ ভোট। দোয়ারাবাজার উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৪০ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৭৯ ভোট। দিরাই উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৪৮ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৮৪ ভোট।
শাল্লা উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ২৫ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ২৮ ভোট। জামালগঞ্জ উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৪৪ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৩৭ ভোট। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৪৩ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ২৫ ভোট। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৫৫ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৫১ ভোট।
মধ্যনগর উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৩৭ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ১৫ ভোট। তাহিরপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৫১ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৪৩ ভোট। ছাতক উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৬০ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ১২০ ভোট। জগন্নাথপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৮৯ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ২৯ ভোট। ধর্মপাশা উপজেলায় মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছে ৪১ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ৪০ ভোট।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জেলার ১২টি কেন্দ্রের ২৪টি বুথে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ২২৯ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩৩ এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, সারা জেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতা করছে র্যাব, বিজিবি। কোন কেন্দ্রেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রাজশাহী
রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল নির্বাচিত হয়েছেন। মীর ইকবাল কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্তারুজ্জামান আক্তার পেয়েছেন ৫৬৬ ভোট।
আজ বিকেলে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে এই ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
চেয়ারম্যান পদে অন্য দুই প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল তালগাছ প্রতীকে ৭ ও আফজাল হোসেন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৪ ভোট।
জেলার ৯টি উপজেলার ৯টি কেন্দ্রের ১৮টি বুথে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবার মোট ৫১ জন প্রার্থী এই নির্বাচনে অংশ নেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য পদে ১৭ জন ও ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে রয়েছে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ নির্বাচনে সিটি মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরসহ ১ হাজার ১১৮৫ জন জনপ্রতিনিধির মধ্যে ১ হাজার ১৭৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
খুলনা
খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ হারুনুর রশীদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৩৬ ভোট। খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার সোমবার বিকেলে তার কার্যালয়ে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
অপর ২ প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা ৪০৩ ভোট ও ডা. শেখ বাহারুল আলম ৩৭ ভোট পেয়েছেন। মোট ৯৭৮ জন ভোটারের মধ্যে ৯৭৭ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি ভোট বাতিল হয়েছে।
ফরিদপুর
ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহাদাৎ হোসেন। তিনি ৬২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন।
নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ফারুক হোসেন পান ৫৪০ ভোট।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে মোট ভোটার ছিলেন ১ হাজার ১৮১ জন। ভোট কাস্ট হয় ১ হাজার ১৬৭টি। চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সদস্য পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, নির্বাচনকে ঘিরে র্যাব, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির চার স্তরের নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ জুডিশিয়াল স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করে। কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
কুড়িগ্রাম
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সারাদেশের মতো কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার খবর ছিলনা এবারের ভোটে। জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন আগেই। এ কারণে জেলার ৯ উপজেলার ৯টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ হয় সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে।
সব কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেয়া হয়েছে। ভোটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা ছিলো চোখে পড়ার মতো। সবকয়টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ হয় শান্তিপূর্ণভাবে। সোমবার সকাল ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে। তবে নাগেশ্বরীতে ভোট শেষ হতে প্রায় ১৫ মিনিট বেশি সময় লেগেছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাফর আলীকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর আগের মেয়াদেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. জাফর আলী।
জেলার ৯টি উপজেলাতে ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ৩টি করে উপজেলা একসঙ্গে রেখে তিনটি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। প্রতি ওয়ার্ডে অর্থাৎ উপজেলায় একটি করে কেন্দ্রের দু’টি করে কক্ষে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ চলে।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য বলছে, ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মোট ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে তিনটি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ১০ জন প্রার্থী। ভোট গ্রহণ শেষে সাধারণ সদস্য পদে ৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে তিনজনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনের সোমবার অনুষ্ঠিত ভোটে ১নং ওয়ার্ড ভূরুঙ্গামারীতে সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন মো. জহির উদ্দিন। তালা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতি প্রতীকে জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন ৫৭ ভোট।
২নং ওয়ার্ড নাগেশ্বরীতে একরামুল হক বুলবুল বিজয়ী হয়েছেন। তিনি তালা প্রতীকে পেয়েছেন ১০৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজি নাজমুল হুদা লাল হাতি প্রতীকে পায় ৮৬ ভোট। ৩নং ওয়ার্ড ফুলবাড়ীতে সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মনোয়ারা বেগম। সাধারণ সদস্য পদে এ নারী প্রার্থীর প্রতীক ছিল হাতি। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল আলম মন্ডল তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪ ভোট।
কুড়িগ্রাম সদর ৪নং ওয়ার্ডে সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন মো. মিনহাজুল ইসলাম। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। টিউবয়েল প্রতীক নিয়ে ৪৯ ভোট পেয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেসমিন আরা বেগম বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ ভোট। ৫নং ওয়ার্ড রাজারহাটে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. এনামুল হক। বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবয়েল প্রতীকের আব্দুস সামাদ সরকার পেয়েছেন ৩৬ ভোট। উলিপুর ৬নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন মো. জুয়েল। হাতি প্রতীক নিয়ে ৯২ ভোট পেয়েছেন তিনি । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি তালা প্রতীকে পান ৮৭ ভোট।
৭নং ওয়ার্ডে চিলমারীতে সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন মো. জামিনুল হক। তালা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৪০ ভোট। নলকূপ প্রতীকে রেজাউল করিম লিচু ৩৮ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ড রৌমারীতে বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক নিয়ে ৪১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন হারুনর রশিদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আফজাল হোসেন ৩৭ ভোট পায় টিউবয়েল প্রতীকে। ৯নং ওয়ার্ড রাজিবপুরে বিজয়ী হয়েছেন সোহেল সরকার। হাতি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব রশিদ তালা প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ ভোট।
সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে (নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী) বিজয়ী হয়েছেন মাসুদা ডেইজী। তার প্রতীক ছিল হরিণ। কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও উলিপুর নিয়ে ২নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে হরিণ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন শিউলি বেগম। এদিকে ৩নং ওয়ার্ডে (চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর) সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে আরমিন নাহার ফুটবল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
নড়াইল
নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস আনারস প্রতীকে ২৬০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটর সাইকেল প্রতীকে সৈয়দ ফয়জুর আমীর লিটু ১৭৮ ভোট এবং অপর বিদ্রোহী প্রার্থী চশমা প্রতীকের শেখ মো. সুলতান মাহমুদ পেয়েছেন ১১৩ ভোট।
নির্বাচনে সংরক্ষিত ১ আসনে শাহিনুর আক্তার রুমা এবং এবং সংরক্ষিত ০২ হতে নির্বাচিত হয়েছেন জেসমিন নাহার।
এছাড়া ৩ উপজেলার ৩ জন নির্বাচিত সদস্য হলেন নড়াইল সদরে খোকন সাহা, লোহাগড়া থেকে শামসুল আলম কচি এবং কালিয়া থেকে খান শাহিন সাজ্জাদ নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে ৩ উপজেলায় ৪টি ভোট কেন্দ্রে ৫৫২ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন। এরমধ্যে একটি ভোট নষ্ট হলে ৫৫১টি ভোট গণনায় ফলাফল তৈরি হয়।
এদিকে সকালে ভোট শুরু হবার পরে বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান ১৩ জন ভোটারসহ শিল্পকলা একাডেমির ভোট কক্ষে প্রবেশ করে অন্য ভোটারদের ভোট প্রদানে হস্তক্ষেপ করেন। এসকল বিষয় সাংবাদিকদের নজরে আসলে পুলিশ সুপার ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তব্যরত পুলিশের উপর হুমকি দেন, পরে বের হবার সময় সাংবাদিকের উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবাদিকরা কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নিয়ে ভোট পর্যবেক্ষণ করবে।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকেরা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি দ্রুত কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তিনি জানান, এমন ঘটনা আর ঘটবে না। এরপর ঘটলে সাংবাদিকরা যেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮২২ ভোট। তার প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল আলম এমএসসি মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৫৩ ভোট। বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ২৬৯ ভোট বেশি পেয়ে আল মামুন সরকার বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে জেলার ৯টি উপজেলার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে ৪৩ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ও পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলায় আল মামুন সরকার পান ৭১ ভোট ও শফিকুল আলম ৯৬ ভোট, সরাইলে আল মামুন সরকার ৫০ ও শফিকুল আলম ৬৯ ভোট, সদর উপজেলায় আল মামুন সরকার ৭৪ ও শফিকুল ৮৮ ভোট, বিজয়নগরে আল মামুন সরকার ৬৯ ও শফিকুল ৬৩ ভোট, আশুগঞ্জে আল মামুন সরকার ৭০ ও শফিকুল ৩৬ ভোট, আখাউড়ায় আল মামুন সরকার ৬৮ ও শফিকুল ১২ ভোট, কসবায় আল মামুন সরকার ৯৮ ও শফিকুল ৪৬ ভোট, নবীনগরে আল মামুন সরকার ১৮৬ ও শফিকুল ৯৭ ভোট এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আল মামুন সরকার পেয়েছেন ১৩৬ ভোট ও শফিকুল আলম পেয়েছেন ৪৬ ভোট।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলার ৯টি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটিতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করে।
দিনাজপুর
দিনাজপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বেসরকারিভাবে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ দেলোয়ার হোসেন নির্বাচিত হয়েছে।
এই নির্বাচনে আনারস প্রতীকে আলহাজ দেলোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ১৬২টি ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজিজুল ইমাম চৌধুরী চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৮ ভোট এবং আওয়ামীলীগ নেতা তৈয়ব উদ্দিন চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২৬ ভোট।
এই নির্বাচনে ১ হাজার ৪৭৯ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৪৭১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। দিনাজপুর জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শাহীনুর ইসলাম প্রামাণিক নির্বাচনের ফলাফলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শেরপুর
শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন কবীর রুমান।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচনের ভোটগণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার। নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী হুমায়ুন কবীর রুমান মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৫৪৯টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল আনারস প্রতিকে পেয়েছেন ১৮৭ ভোট। আরেক প্রার্থী জাকারিয়া বিষু চশমা প্রতিকে পেয়েছেন ৬ ভোট।
এর আগে সোমবার সকাল নয়টা থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলে একটানা দুপুর ২টা পর্যন্ত। জেলার ৫টি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ১০টি ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণ করা হয়।
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ টহলে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সশস্ত্র পুলিশ ও আনসারসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন ছিল। জেলায় ৫টি উপজেলা পরিষদ, ৪টি পৌরসভা ও ৫২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিল ৭৪৩ জন।
নাটোর
নাটোর জেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনঃনির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. সাজেদুর রহমান খাঁন।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯ টা থেকে টানা দুপুর ২ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণ শেষে গণনায় দেখা যায় তাঁর প্রাপ্তভোট ৫৪০। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি মনোনীত ড. নূরন্নবী মৃধা পেয়েছেন ২৪৭ ভোট।
আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. সাজেদুর রহমান খাঁন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুন্নবী মৃধার চেয়ে ২৯৩ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
নরসিংদী
নরসিংদীতে জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির হোসেন ভূঁইয়া জয়ী হয়েছেন। আনারস প্রতীক নিয়ে তিনি ৬২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল মতিন ভূঁইয়া পেয়েছেন ৩৫০ ভোট।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে ইভিএমে ভোট শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। জেলায় মোট ৩টি আসন বা পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৬ জন প্রার্থী।
এর মধ্যে, জেলা চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে লড়ছেন আরও ১০ জন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, এই নির্বাচন নিরবচ্ছিন্ন করতে প্রতিটি কেন্দ্র এবং আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন ঘিরে বিজিবি, পুলিশ, আনসার, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ ৪৫০ এর অধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছেন।
যশোর
যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান পিকুল ৯৫৭ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী এলডিপির মারুফ হোসেন কাজল পেয়েছেন ৩৪৩ ভোট।
সোমবার উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
নির্বাচনে সদস্য পদে শার্শা উপজেলায় সালেহ্ আহমেদ মিন্টু, ঝিকরগাছায় রফিকুল ইসলাম বাপ্পী, চৌগাছায় তৌহিদুর রহমান, অভয়নগরে আব্দুর রউফ মোল্লা, বাঘারপাড়ায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভোলা, সদর উপজেলায় জবেদ আলী, মণিরামপুরে গৌতম চক্রবর্তী, কেশবপুরে আজিজুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছন।
সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ড (শার্শা, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা) শ্যায়লা জেসমিন, ২ নম্বর ওয়ার্ড (সদর, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর) রেহেনা খাতুন, ৩ নম্বর ওয়ার্ড ( মণিরামপুর ও কেশবপুর) তাসরিন সুলতানা শোভা নির্বাচিত হয়েছেন।
পটুয়াখালী
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পটুয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে একটানা দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাফিজুর রহমান ঘোড়া প্রতীকে ৫৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলহাজ্ব মো. খলিলুর রহমান মোহন আনারস প্রতীকে ৪৮৬ ভোট পেয়েছেন।
এ নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ড (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) মহিলা সদস্য পদে ২২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নুরুন নাহার শেলী (হরিন)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাসিমা আক্তার (ফুটবল) পেয়েছেন ১১১ ভোট। ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (বাউফল-দশমিনা) আসনে ১৪৬ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন কামরুন নাহার (দোয়াত কলম)। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী পশারী রানী (হরিণ) পেয়েছেন ১২০ ভোট। ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (গলাচিপা-কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মহিলা সদস্য হয়েছেন মোসা. বিলকিস জাহান।
১নং সাধারণ ওয়ার্ডে (সদর) ১১৪ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন মো. জামাল হোসেন (টিউবওয়েল), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চিন্ময় বণিক (হাতি) পেয়েছেন ৫৫ ভোট। ২নং সাধারণ ওয়ার্ডে (দুমকি) ৪০ ভোটে পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. জাকারিয়া কাওসার (টিউবওয়েল), তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আবুল বাসার (হাতি) পেয়েছেন ২৩ ভোট। ৩নং ওয়ার্ডে (মির্জাগঞ্জ) ৫২ ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল্লাহ আল জাবির (তালা), তার প্রতিদ্বন্দ্বী শামীম (হাতি) পেয়েছেন ২৭ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে (বাউফল) দুইজন প্রার্থী মো. জসীম ফরাজী (তালা) ও শাহজাহান সিরাজ (অটোরিক্সা) ১০৪ ভোট করে দুজনেই সমান ভোট পেয়েছেন। ৫নং ওয়ার্ড (দশমিনা) ৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন গাজী মো. মিজানুর রহমান মিজান (টিউবওয়েল), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ জাকির হোসেন ভুট্টো (তালা) পেয়েছেন ৩৭ ভোট। ৬নং ওয়ার্ড (গলাচিপা) ১২৬ ভোটে হয়েছেন মাঈনুল ইসলাম রনো (তালা), তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী মে. শাহীন মিয়া (টিউবওয়েল) পেয়েছেন ৩১ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে (কলাপাড়া) ৮৪ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. ফিরোজ শিকদার (তালা), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান শুভ (টিউবওয়েল) পেয়েছেন ৮০ ভোট। ৮নং ওয়ার্ডে (রাঙ্গাবালী) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. মশিউর রহমান শিমুল(ঘুড়ি)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪০ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল মালেক মিয়া (হাতি) পেয়েছেন ৩৩ ভোট। এ জেলায় ১ হাজার ৮৩ ভোটের মধ্য ৫জন ভোটার অনুপস্থিত রয়েছে বলে সহকারী রিটার্নিং অফিসার খান আবি শাহানুর খান জানান।
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৭ ভোট বেশি পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আনাসর প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন। মোট ৮৮৯ ভোটের মধ্যে গোলাম মহীউদ্দীন পেয়েছেন ৪৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতীকের প্রার্থী কেএম বজলুল হক খাঁন রিপন পেয়েছেন ৪২৫ভোট।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নাজমা আক্তার (বই), ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে রেশমী আক্তার (টেবিলঘড়ি), ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এফএম রিপন আক্তার ফজলু (মাইক), সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে প্রভাষক শফিকুল ইসলাম শফিক (টিউবওয়েল), ২নং ওয়ার্ডে মাহাবুবুর রহমান জনী (টিউবওয়েল), ৩নং ওয়ার্ডে মো. আব্দুল কুদ্দুস (ক্রিকেট ব্যাট), ৪নং ওয়ার্ডে রাজ্জাক হোসাইন রাজ (টিউবওয়েল), ৫নং ওয়ার্ডে আবুল বাশার (টিউবওয়েল), ৬নং ওয়ার্ডে মো. হায়দার আলী তারেক (টিউবওয়েল), ৭নং ওয়ার্ডে মো. তমিজ উদ্দিন (তালা) বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় সাতটি কেন্দ্রের ১৪টি কক্ষে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দুপুর দুইটা পর্যন্ত কোন গোলযোগ বা অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোট গ্রহণ শেষ হয়।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন, সাধারণ সদস্য পদে ১৯জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৮৯জন। এর আগে ২০১১ সালে জেলা পরিষদের প্রশাসক এবং ২০১৭ সালের নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম হারুন অর রশিদ আনারস প্রতীকে ৪৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬৫ ভোট।
জেলার ৬টি উপজেলা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ভোটে মোট ৯৯৮জন ভোটারের মধ্যে ৯৪১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ভোট দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভোটারদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ভোটদানের লক্ষ্যে তাদের টহল অব্যাহত রাখে। জেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগমের জানান, এম হারুন অর রশিদ ১৫ ভোটের ব্যবধানে হারুন অর রশিদ বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জেলার কোথায় কোন অভিযোগ আসেনি। শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জেলায় মোট ভোটার ছিলো ৯৫৪টি। এর মধ্যে ৯৪৩ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োজন করেছেন। ২টি ভোট বাতিল হয়েছে।
পাবনা
পাবনা জেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পাবনায় শুধু সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জেলার ৯টি উপজেলায় ৯টি ভোট কেন্দ্রের ১৮টি বুথে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ভোটার ছিলেন ১ হাজার ১১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৫০ জন এবং নারী ভোটার ২৬৪ জন। ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৪৭ জন ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার। ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন, সদর উপজেলায় নজরুল ইসলাম সোহেল, আটঘরিয়া উপজেলায় কামরুজ্জামান টুটুল, ঈশ্বরদী উপজেলায় তফিকুজ্জামান রতন, সুজানগর উপজেলায় ফররুখ কবির বাবু, বেড়া উপজেলায় মাসুদ রানা ময়ছার, সাঁথিয়া উপজেলায় আসাদুল ইসলাম আলতাব, ফরিদপুর উপজেলায় আব্দুল জলিল, চাটমোহর উপজেলায় সাইদুল ইসলাম পলাশ ও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় আসলাম আলী। আর সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন, আইরিন কিবরিয়া, আনোয়ারা আহমেদ ও আঁখি খাতুন।
পাবনা জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চাটমোহর উপজেলায় দুইজন ও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ২ জন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় লটারি করে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।