ফাহিমা মাহজাবিন: ২০২২ সালের অক্টোবর মাস। খবরের পাতা খুলতেই একটা খবর চোখের সামনে এসে পড়ল।খবরটা পড়ে যতটুকু বোধ হল, ভারতের চন্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি তুলে কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিল।

 

ঘটনাটাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকাটা জানা দরকার।বলা যায় যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম না থাকত,তাহলে এত দ্রুততার সাথে আপত্তিকর ভিডিও/ছবিগুলো হয়ত ছড়াতে পারত না, কিন্তু এই কথাটাও এখানে মাথায় রাখা দরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণেই সংবাদটা দেশে-বিদেশে দ্রুততার সাথে ছড়িয়েছে যার কারণে প্রশাসনের উপর একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছিল দ্রুততার সাথে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের। এর মাধ্যমে আমরা এটা বলতে পারি যে সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনও তুলনাই হয় না। খবরটা দেশের গণ্ডি পেড়িয়ে ‘আন্তর্জাতিক সংবাদ’ হিসেবে বিদেশে খানিকটা আলোড়ন তুলেছিল ।তাই এটা বলা যায় যদি আমরা বিশ্ব সাংবাদিকতার বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে দেখি তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া বিশ্ব সাংবাদিকতা প্রায় অচল । বিষয়টাকে একটু ভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা করা যাক। এক দশক আগে যখন “ আরব বসন্তের" সূচনা হয়, তখন দেখা যায় মানুষকে একত্রিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু তখন এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতেই দেশ-বিদেশে বসে মানুষ ওই সময়কার আসল পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে।বিশ্বসাংবাদিকতার একটা প্রাথমিক ধারণা হল মানুষকে ভোগৌলিক সীমানার বাইরে গিয়ে বর্তমান পরিস্থতি সম্পর্কে অবগত করা । আর তা খানিকটা সহজ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমান যুগে একটা বড় ভূমিকা রাখে দেশে বিদেশে কোনও দেশের পরিস্থিতি ও গুরুত্ত্বপূর্ণ সংবাদ পৌছানোর জন্য। তার জন্যই তো যেকোন দেশের সরকার প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এর একটা উদাহরণ হিসেবে চীনের কথা বলা যেতে পারে । চীন থেকে যে কোন ও সংবাদ বের করা অনেক কঠিন । তার একটা বড় কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ।তাই যখন চীন থেকে যেকোন সংবাদ আসে, বেশিরভাগ মানুষই তাতে ভ্রু কুচকানো শুরু করেন।কারণ বেশিরভাগ সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এর সত্যতা নিশ্চিত করা যায় না । এটা বলা ভুল হবে যদি বলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া বিশ্ব সাংবাদিকতা করা অসম্ভব, কিন্তু এটা বলা সমীচীন হবে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া বিশ্ব সাংবাদিকতা প্রায় অচল।

মাস্টার্স শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।