দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নিয়ে রীতিমতো চরম অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় মাস তিনেক আগে "স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না" এই কারন দেখিয়ে পদত্যাগ করেন ডিএসইর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভুঁইয়া। যদিও পরবর্তীতে জানা যায় পদোন্নতি নিয়েই সমস্যার জেরে পদত্যাগ করেন তিনি।

তারিক আমিন ভুঁইয়ার পদত্যাগের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করছেন প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সাইফুর রহমান মজুমদার। যার বিরুদ্ধেও উঠছে স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে পদোন্নতি নিয়ে ডিএসইতে সৃষ্টি করেছেন অস্বস্তিকর এক পরিবেশ। ডিএসইতে চলা এসব প্রমোশন কান্ড নিয়ে চিন্তিত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড একচেঞ্জ কমিশন। সেই প্রেক্ষিতে আজ মিটিংয়ে বসেছে ডিএসই এর মানব সম্পদ বিভাগ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড কমিশন। সভায় সভাপতিত্ব করছেন বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

গত ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ডিএসই বোর্ড সভায় সর্বশেষ ১৮ কর্মকর্তার পদোন্নতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পদোন্নতি ঘোষণা দিয়ে আবার বাতিল এরুপ কান্ডে কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ। আর্থিক খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতি নিয়ে এরুপ অব্যবস্থাপনা জন্ম দিয়েছে হাস্যরসের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অযোগ্য ব্যক্তিদের চেয়ারে রাখার ফল এটি। যার দায় শুধু বর্তমান কর্মকর্তাদের নয়। তাদের দাবি, অতীতের ডিএসই কর্মকর্তারাও এই দায় এড়াতে পারেন না।

প্রমোশন কান্ডের শুরু হয় গত ২২ আগস্ট থেকে। গত ২২ আগস্ট ডিএসইর ৯৫ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ডিজিএম থেকে সিনিয়র জিএম পর্যায়ের কর্মকর্তাও ছিলেন। কিন্তু নিয়ম অনুসারে জিএম এবং এর ওপরে পদোন্নতির জন্য এনআরসি (নমিনেশন অ্যান্ড রিমিউনারেশন কমিটি) অনুমোদন লাগে। কিন্তু সেটি করা হয়নি সেই সময়। পরবর্তীতে এনআরসি নেয়া হয়নি এমন খবর প্রকাশ পেলে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাবেক এমডি তারিক আমিন ভুঁইয়া। তারিক আমিন ভুঁইয়ার সময় সেই ৯৫ কর্মকর্তা থেকে ১৮ জনের পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে। বাকি ৭৭ জনের পদোন্নতি রয়েছে। ডিএসইর একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, যোগ্য লোকদের বাদ দিয়ে পছন্দের লোকদের দেয়া হয়েছে একাধিক প্রমোশন।

এদিকে জানা যায়, ডিএসই তে এখন কর্মকর্তাদের একাধিক গ্রুপিং সৃস্টি হচ্ছে। পদোন্নতি পাওয়া ও পদোন্নতি না পাওয়া। পরবর্তীতে পদোন্নতি বাতিল। যার কারনে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পরিবেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান একাধিক ডিএসই কর্মকর্তা। আবার, পদোন্নতি না হওয়া কর্মকর্তারা রয়েছে ভীত অবস্থায়। পদোন্নতি সংক্রান্ত একাধিক খবর বাইরে আসায় শীর্ষ কর্মকর্তারা পরোক্ষভাবে নানা হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা বলতেডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি সাইফুর রহমান মজুমদারের সাথে যোগাযোগের চেস্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।