মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি- ইমরান খান
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) লং মার্চ চলছে। শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে প্রবেশ করবেন দলের নেতা ইমরান খান।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাকে দেখতে ছুটে আসছেন নেতাকর্মী, ভক্ত, সমর্থকরা। লংমার্চ শুরুর আগে নিজের ওপর হামলা চেষ্টার কথা স্মরণ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের শীর্ষ সম্প্রচার মাধ্যম জিও টিভি তাদের অনলাইনে লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সাক্ষাৎকারে ইমরান ওই হামলা চেষ্টার কথা বলেন। তিনি বলেন, আল্লাহই ত্রাণকর্তা। আমি মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি।
এ সাক্ষাৎকারে কিছু মানুণ পিটিআই ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধাতে চায় বলে মন্তব্য করেন ইমরান। পিটিআই প্রধান বলেন, কিছু লোক সেনাবাহিনী ও পিটিআইয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চায়। আমার সময় আমি নিজের পছন্দে কোনো সেনাপ্রধান বাছাইয়ের কথা ভাবিনি। কারণ, আমি যোগ্যতাভিত্তিক সিদ্ধান্তে বিশ্বাসী।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই ভালো-মন্দ লোক থাকে। ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান নিজেই সম্মান অর্জন করে। তারা তাদের সিদ্ধান্তের কারণে সম্মান পায়। এটা আমার দেশে, আমার সেনাবাহিনী। সংঘর্ষ হবে, এমন কোনো কারণ নেই।
নিজের লং মার্চ নিয়েও এ সময় কথা বলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেছে। আমি জনসাধারণের কাছে একটি বার্তা দিতে চাচ্ছি, তা হলো দেশ একটি সিদ্ধান্তমূলক পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিকে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাইরে থেকে কেউ যেন আমাদের নির্দেশ না দেয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা তখনই অর্জিত হবে, যখন আমরা দেখব রাশিয়া থেকে তেল কিনব কি কিনব না, সে ব্যাপারে কেউ আমাদের নির্দেশ দেবে না। বলাবাহুল্য, এই কথার মাধ্যমে তিনি পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ইমরান আরও বলেন, ন্যায়বিচারের ওপর ভিত্তি করে একটি ব্যবস্থা মানুষকে স্বাধীনতা দেয়। আমরা সেটাই চাই। জাতির স্বার্থে আমি রাওয়ালপিন্ডি যাচ্ছি। জাতি আমার জন্য বেরিয়ে আসবে।
এ সময় নিজের আহ্বানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যা-ই করুক না কেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যখনই নির্বাচন হয় তারা হেরে যাওয়ার ভয় পায়। নির্বাচনের সময় খুব বেশি হলে অক্টোবর পর্যন্ত ঠেলে দেওয়া হবে। তাদের চাপ দিতে হবে। নির্বাচন ছাড়া দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর কোনো উপায় নেই।
এ সময় পাকিস্তান মুসলিম লিগকে (নওয়াজ) চোরের দল বলে আখ্যা দেন ইমরান খান। এই চোররা মানুষকে ভয় পায়। কেউ তাদের জন্য পা বাড়ায় না। এ সময় নওয়াজ শরীফকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা মনে করে যে মিথ্যা বলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাকে ছাড়া রাজনীতি চলবে না। আমার কোনো সমস্যা নেই। তার আসা উচিত ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত।
এদিকে, ইমরান খানকে লং মার্চ বাদ দিয়ে রাজপথ ছেড়ে পার্লামেন্টে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা থাকায় পিটিআই নেতাকে লংমার্চ স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। নিজ মন্ত্রণালয় থেকে এ সম্পর্কিত একটি চিঠি পিটিআই চেয়ারম্যানের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি আমলে না নিয়ে লং মার্চ সফলের উদ্দেশ্যে আছেন ইমরান খান।
তার সরকারবিরোধী মার্চের পিণ্ডি পৌঁছানোর আগে রাজধানী ইসলামাবাদের রেড জোন সিল করে দেওয়া হয়েছে। পিণ্ডি ও ইসলামাবাদকে সংযুক্তকারী এলাকা ফৈজাবাদ ও জিরো পয়েন্টে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীর চক থেকে ইসলামাবাদে প্রবেশের পথ। চুঙ্গী-২৬ ও কোরাল চক থেকে নগরীর প্রবেশপথও আংশিক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।