বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণকাজ একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে - মন্ত্রিপরিষদ সচিব
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণকাজ একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত আছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এত বড় একটা প্রজেক্ট আমরা ৪ বছরে করে ফেললাম। কোনো ধরনের ক্লেম নেই। এটা সত্যিই উদাহরণ হয়ে থাকবে। ’
এ সময় মন্ত্রিপরষদ সচিব প্রকল্প পরিচালক ও প্রজেক্ট ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে কিছুক্ষণের মধ্যে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ জানান, টানেলের দক্ষিণ টিউবের কাজ শেষ হয়েছে। টানেলের পুরো কাজ এখনো শেষ হয়নি। সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে আগামী ডিসেম্বর পুরো মাস লাগতে পারে। এরপর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সব কাজ শেষ করে টানেল প্রস্তুত হতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সব ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে টানেল দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে।
টানেল প্রকল্প পরিচালক দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে প্রথম এই টানেল নির্মিত হচ্ছে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায়। ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই মেগা প্রকল্পটি। এখন চলছে টানেলের ভেতরে ফায়ার ফাইটিং, লাইটিং ও কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনার কাজ। পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে প্রকল্পের গাড়ি। নদীর তলদেশে টানেল নির্মিত হওয়ায় যে কোনো সময় পানি জমতে পারে এই আশঙ্কায় টানেলের মধ্যে বসানো হচ্ছে ৫২টি সেচ পাম্প। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
নদীর তলদেশে স্থাপিত দুটি টিউবের একটিতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে বিকল্প পথে গাড়ি চালানো যায়, বর্তমানে তারও কাজ চলছে। বাতি ও পাম্প স্থাপন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরির কাজও একই সঙ্গে চলছে। নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, ৭৭২ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার। এখন চলছে কর্ণফুলীর দক্ষিণ প্রান্তে আনোয়ারা অংশে টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ।
টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদের হারে ২০ বছর মেয়াদে এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। তবে ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে প্রকল্পের ব্যয় আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।