স্পেনকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে এশিয়ার জাপান
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: শেষ রাউন্ডের ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ-ই’র শীর্ষ হয়ে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর টিকিট পেল এশিয়ার পাওয়ার হাউজ জাপান। এই নিয়ে চতুর্থবারের মত বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে গেল জাপান। তবে এ ম্যাচ হারলেও নকআউট পর্বে গেছে স্পেনও।
দোহার খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতে স্পেনকে ২-১ গোলে হারায় জাপান। তবে জাপানের কাছে হারলেও গোল বিবেচনায় এগিয়ে থাকার সুবাদে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে পরের রাউন্ডে গেছে স্পেন।
গ্রুপের অন্য ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় টানা দ্বিতীয়বারের মত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলো জার্মানি।
৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো এশিয়ার পাওয়ার হাউজ জাপান। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হলো স্পেন। স্পেনের সমান ৪ পয়েন্ট জার্মানিরও। কিন্তু স্পেনের গোল +৬। জার্মানির +১ গোল। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শেষ দল কোস্টারিকা।
গ্রুপে দুই রাউন্ডের খেলা শেষে স্পেন ৪ ও জাপানের সংগ্রহ ছিল ৩ পয়েন্ট। দু’দলের সামনেই শেষ ষোলোর পথ খোলা ছিলো। জয় বা ড্র’তে পরের রাউন্ডে পা রাখবে স্পেন। জয় পেলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত হবে জাপানের। ড্র বা হারে গ্রুপের অন্য ম্যাচ কোস্টারিকা ও জার্মানির ফলাফলের দিকে চেয়ে থাকতে হবে জাপানকে।
এমন সমীকরণের জাপানের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই খেলতে নামে স্পেন। মাঠেই সেই প্রমাণ মিলে। বল দখলে রেখে ১১ মিনিটে প্রথম গোল পেয়ে যায় স্পেন। ডিফেন্ডার সিজার আজপিলিকুয়েটার ক্রস থেকে হেডে গোল করেন স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। স্পেনের জার্সি গায়ে ৬০ ম্যাচে ৩০তম গোল করলেন তিনি।
লিড পেয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে স্পেন। আক্রমণে কোনঠাসা করে ফেলে জাপানকে। ২৩ মিনিটে বল নিয়ে জাপানের গোলমুখে শট নেন মোরাতা। আটকে দেন জাপানের ডিফেন্ডার মায়া ইউশিদা।
৩৬ মিনিটে আক্রমণের সুযোগ পায় জাপান। মিডফিল্ডার জুনিয়া ইতোর পাসে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে স্পেনের গোলমুখে শট নেন মিডফিল্ডার ডাইচি কামাডা। কিন্তু সেটি গোলবার খুঁজে পায়নি।
এরপর ৪২ মিনিটে প্রথমার্ধে শেষবারের মত আক্রমণে যায় স্পেন। মিডফিল্ডার সার্জিও বাসকুয়েটসের পাস থেকে পেয়ে একজনকে কাটিয়ে জাপানের বক্সে ঢুকে পড়েন স্ট্রাইকার ডানি ওলমো। জাপানের গোলমুখে শটও নিয়েছিলেন তিনি। সেটি জাপানের ডিফেন্ডারের পা লেগে প্রতিহত হয়। ফলে মোরাতার একমাত্র গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন।
প্রথমার্ধে ৮৩ শতাংশ বল নিজেদের আয়ত্বে রাখতে পারলেও পাঁচটির মধ্যে মাত্র তিনটি শট গোল মুখে নিতে পারে স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই যেন অন্য এক জাপানকে দেখা যায়। মাত্র ৩ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করে লীড নেয় এশিয়ার দলটি।
৪৮ মিনিটে স্পেনের ডিফেন্ডার অ্যালেক্স বালডের সঙ্গে বলের লড়াইয়ে হেড করেন মিডফিল্ডার জুনিয়া ইতো। বক্সের বাইরে বল পান মিডফিল্ডার রিটসু ডোয়ান। বল নিয়ে তিন-চার কদম এগিয়ে জায়গা বানিয়ে বাঁ-পায়ে জোড়ালো শট নেন ডোয়ান। তার জোড়ালো শট আটকাতে বাঁ-দিকে ঝাপিয়ে পড়েও রুখতে পারেননি স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সাইমন। তার হাত ঘেষে বল জালে প্রবেশ করে। তাতে সমতায় ফেরে জাপান।
এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতে ৩ মিনিট পর আবারও আনন্দে মেতে উঠে জাপান। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ডান-প্রান্ত দিয়ে স্পেনের বক্সের ভেতর প্রবেশ করে বাঁ-দিকে বল বাড়ান মিডফিল্ডার কাউরু মিতোমা। বল চলে যাচ্ছিল মাঠের বাইরে। সেখানে ছুটে গিয়ে দারুনভাবে শট নিয়ে গোল আদায় করে জাপানকে এগিয়ে নেন মিডফিল্ডার আরো টানাকা।
ম্যাচের বাকী সময়ে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চালায় দু’দল। তবে গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করে তা কাজে লাগাতে পারেনি কোন দলই। স্পেনের ওলমো ও মার্কো আসেনসিয়ো সুযোগ নষ্ট করেন। জাপানের কো ইতাকুরাও গোলের সুযোগ হেলায় হারান।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জয় ও পরের রাউন্ডে উঠার আনন্দ নিয়ে মাঠে ছাড়ে জাপান। বিশ্বকাপের মঞ্চে টানা দ্বিতীয়বারের মত নকআউট পর্বে উঠলো জাপান।