কলকাতায় শেষ হলো বাংলাদেশ বইমেলা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: এবার থেকে কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা শুরু হবে প্রতি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের প্রথম সোমবার। এতদিন বইমেলা শুরু হয়ে আসছিল জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতিবারে।
আগামী বছর কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা হবে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের প্রথম ৪ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেস্বর। যদি পশ্চিমঙ্গ সরকার প্রতিবছর কলেজ স্ট্রিট প্রাঙ্গণে মেলা করার অনুমতি দেয় তাহলে স্থায়ীভাবে কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে হবে এই বইমেলা।
রোববার (১১ ডিসেম্বের) কলকাতায় ১০ম বাংলাদেশ বইমেলার শেষদিনে এমনই ঘোষণা দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম।
এ দিন কলকাতায় আয়োজিত বাংলাদেশ বইমেলার সমাপ্তি হয়। মেলা শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও সমবেত কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমণি’ ধ্বনি নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে আনুষ্ঠানিক সমাপনী টানা ১০ম বাংলাদেশ বইমেলার।
শেষ দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী, নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর এমপি। তিনি বলেন, মেলা মানেই মেলামেশার স্থান। একে অপরের সাথে দেখা হওয়া, কথা হওয়া এটাই তো দরকার। তবেই আমরা একে অপরকে বেশি বুঝতে পারব, জানতে পারব। এই বন্ধন যত ঘনিষ্ঠ হবে তত আমাদের সম্পর্ক দৃঢ় হবে। সরকারে সরকারে মৈত্রী হয়, তবে সেখানে আবার টানা-পোড়েনও থাকে। এরকম সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে মানুষের যে বন্ধন তৈরি হয়, সেই বন্ধন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করে।
বইমেলার শেষদিনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি কামাল চৌধুরী, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের বাণিজ্যিক শাখার প্রথম সচিব শামসুল আরিফ, ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ইমানুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতি করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ-কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সম্মিলিত উদ্যোগে গত ২ ডিসেম্বর ১০ম বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজরুল ইসলামসহ বিশিষ্টজনরা। এবারে বেইমেলার আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতার বইপাড়া বলে পরিচিত কলেজ স্ট্রিটের কলেজ স্কয়ার প্রাঙ্গণে।
প্রতিবারের মতো এ বছরও বাংলাদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা মেলায় অংশ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৬৮টি স্টলে, ৭৫টি বাংলাদেশি প্রকাশনার বই কলকাতার পাঠকদের কাছে হাজির করা হয়েছিল। প্রতিটি বইয়ের স্টলে বিপুল বাংলাদেশি বইয়ের সম্ভারের পাশাপাশি কলকাতার বইপ্রেমীদের জন্য প্রতিদিন ছিল এক মঞ্চে দুই বাংলার প্রথিতযশা শিল্পীরা এবং কলকাতায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠান।
শেষ দিনের অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন সোমালী পান্ডা ও সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে মলি দত্ত ও তার গ্রুপ এবং লোকসঙ্গীত পরিবেশন করে উজ্জয়ন। বইমেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করেছে কলকাতার ভাষা ও চেতনা সমিতি।