গণতন্ত্র মঞ্চ কর্মসূচি ঘোষণা করবে আজ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আগামী নির্বাচন সামনে রেখে গঠিত হওয়া গণতন্ত্র মঞ্চ যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে ১৪ দফা চূড়ান্ত করেছে।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে তাদের এসব কর্মসূচি ঘোষণা দেবে সংগঠনটি।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সোমবার বেলা ১১টায় আমাদের সংবাদ সম্মেলনে।
সেখানে আমরা যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি ১৪ দফা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেব। আর যুগপৎ আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের বিষয়টিও থাকবে।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংশোধন করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখাসহ ১৪ দফা দাবি রাখা হয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, তাদের দাবিগুলো হলো—
বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা, সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা, অবাধ, নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে নির্বাচনে টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ, আরপিও সংশোধন, প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরিবর্তন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করা।
এ ছাড়া সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়পাল ও সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা।
সংবিধানের ৭০তম অনুচ্ছেদের সংস্কার করে সরকার গঠনে আস্থাভোট ও বাজেট পাস ছাড়া সব বিলে স্বাধীন মতামত দেওয়ার সুযোগ করা।
প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।
এর পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কারাবন্দির অনতিবিলম্বে মুক্তি। সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে সভা, সমাবেশ, মিছিলে কোনো বাঁধা সৃষ্টি না করা। বিরোধী দলের কর্মসূচিতে পুলিশি বাঁধা, হামলা, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা বেআইনি হিসেবে গণ্য করা হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ সহ মৌলিক নিবর্তনমূলক কালাকানুন বাতিল করতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশি ব্যবস্থার নামে শ্রমিক আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ করা।
জরুরিভিত্তিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা। গরিব ও স্বল্পআয়ের পরিবারের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতসমূহে স্বেচ্ছাচারী পন্থায় মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দেওয়া দায়মুক্তি আইন বাতিল করা।
গত ১৫ বছরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং, শেয়ার মার্কেটসহ রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা।
গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ করা। কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল-চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু করা।
উল্লেখ্য, গণতন্ত্র মঞ্চ বাংলাদেশের সাতটি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক জোট। দলগুলো হলো— জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।