দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গ্যাসের চলমান পাইপলাইনের কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে সরকারি চাকরি আইন-২০২২ সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়েছে। 

 

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রস্তাবিত চাকরি আইন-২০২২ এর খসড়ায় শতভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো স্বায়ত্তশাসিত, লেজিসলেটিভ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়ের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সম্মতি নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সচিব জানান, অনেক জায়গায় গ্যাসের পাইপলাইনের কাজ চলছে। এসব কাজ দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, পাইপলাইনগুলো আরো তাড়াতাড়ি করতে বলা হয়েছে, যাতে গ্যাস এবং ফুয়েল পাইপলাইনের মাধ্যমে দেওয়া যায়। তাহলে সিস্টেম লসসহ অন্যান্য লস যেমন ক্যারিং কস্ট, হ্যাজার্ড এগুলো কমে আসবে, ইফেক্টিভিটি বাড়বে, সেজন্য এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব গ্যাস লাইনের বিষয়ে আরও বলেন, অনেক জায়গায় পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। এগুলোর কাজ খুব দ্রুত শেষ করতে হবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা যাবে। বিশেষ করে মেজর সাপ্লাইগুলো এর মাধ্যমে করতে হবে।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, ইনডিভিজুয়েলি সব জায়গায় পাইপলাইন দেওয়া সম্ভব হবে না। গ্রিড লাইন যেমন মেজর জায়গায় যাচ্ছে, ওরকম পাইপলাইনও মেজর জায়গায় নিয়ে গেলে খরচ স্বাভাবিকভাবেই কম হবে। যেমন ঢাকা থেকে পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস যাচ্ছে সব জায়গায়।

সংশোধিত চাকরি আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া সরকারি কর্মচারী আইনে একটা জিনিস পরিষ্কার ছিল না। আইনে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থনৈতিক বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত, লেজিসলেটিভ বডি যেগুলো, যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি এদের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি পরিষ্কার ছিল না। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। তারা বলেছিল, তাদেরও বেশিরভাগ ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে হয়। সুতরাং তাদের বিষয়েও অর্থ বিভাগের একটা অথরিটি থাকতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সংবিধানের ৮৪, ৮৫ ও ৮৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রের যত আয় সব একটা অ্যাকাউন্টে আসবে, একটা অ্যাকাউন্ট থেকেই তা খরচ করা হবে। যাকে ট্রেজারি বলা হয়। এ ট্রেজারির সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলো অর্থ বিভাগ। সুতরাং খরচের ক্ষেত্রে যেন অর্থ বিভাগের এখতিয়ার থাকে। যদি কোনো করপোরেশন বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের মতো বেতন-কাঠামো ঠিক করে নেয়, তাহলে হবে না। সেজন্য যে কোনো অর্থনৈতিক বিষয় হলে অর্থ বিভাগের কাছ থেবে ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে। এজন্যই আইনটির মধ্যে এই ছোট কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে।

সরকারি কর্মচারী আইন হওয়ার আগেও এ বিধান ছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগেও এটা বাধ্যতামূলক ছিল, এখন আইনগত একটি ভিত্তি দেওয়া হলো।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তায় আরও জোর দিতে বলা হয়েছে। জাতীয় তথ্যভান্ডারের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সাবমেরিন কেবলের জন্য যে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।