দেশের মানুষ জনগণের সরকার চায়: খন্দকার মোশাররফ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের মানুষ আগামী দিনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশে জনগণের সরকার চায়, আন্তর্জাতিক শক্তিও তা চায়।
মহান বিজয় দিবসে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই বিজয় দিবসে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে ১০ দফা দিয়েছি, সেই ১০ দফা বাস্তবায়নে এ দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে এ দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫১ বছর পাড়ি দিয়েছি আমরা। কিন্তু দুঃখের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল, শহীদদের যে স্বপ্ন ছিল—দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে, দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি বিরাজ করবে। আজ মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। অর্থনৈতিক লুটপাট, চাঁদাবাজি, বিদেশে অর্থ পাচার করার কারণে আজ দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায়। দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশাহারা, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে অশান্তি এনে দিয়ে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গায়ের জোরে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করেছে। এখন আবার এই ধরনের একটি নির্বাচন করার জন্য সারা বাংলাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন করা হচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের ঘটনার পর সারা দেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁকেও কারাগারে রাখা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলনসহ হাজারো নেতা-কর্মীকে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ কেন্দ্র করে ৭ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারের দমননীতি, তাদের নগ্ন চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
বিএনপির ১০ দফায় যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা যে ১০ দফা ঘোষণা করেছি, সেখানে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির বিষয়ে কোনো দফা নেই, এটা জনগণও চায় না। শুধু জনগণের দাবিকে আমরা এই ১০ দফায় রূপান্তর করে প্রকাশ করেছি। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা করেছি। আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে কে আসবে, কে যাবে, সে ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য দিতে পারি না, আমাদের কোনো কথা থাকতে পারে না। যারা এই সরকারের বিদায় চায়, যারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা যদি এই যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত হতে চায় তাতে আমাদের কিছু বলার থাকে না।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।