আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছে আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্মেলন এলাকা ও আশপাশে পুলিশ, র্যাব ও গোয়ন্দা বিভাগসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সবগুলো ইউনিট দায়িত্ব পালন করবে। সব গেটে আর্চওয়ে ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সম্মেলন এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে পৃথক সংবাদ সম্মেলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সারাদেশ থেকে লাখোধিক নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সব সময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। এর আগে অনেকবার তার জীবন নাশের চেষ্টা হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। এজন্য আমরা তার নিরাপত্তাকে সবসময়ই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, বিশ্বে যত বড় রাজনৈতিক নেতারা আছেন, তার মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা বারবার তার জীবন নাশের চেষ্টা করেছে। অনেকগুলো প্রমাণ আপনাদের কাছে আছে।২১ আগস্ট ও টুঙ্গিপাড়া অন্যতম। সেগুলোকে সামনে রেখে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোসহ সব খুঁটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে চারদিকে সুইপিং, ম্যানুয়াল সুইপিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এক কথায় আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। যাতে আওয়ামী লীগ উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারে। আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দসহ প্রধানমন্ত্রীর যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তার ত্রুটি না থাকে সে বিষয়ে তদারকি করতে এসেছি।
দুই জঙ্গি ছিনতাই ও নতুন জঙ্গি সংগঠনের উত্থানে সুনির্দিষ্ট কোনো থ্রেট আছে বলে মনে করি না। ছিনতাই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। এরই মধ্যে ওই জঙ্গিদের বেশ কয়েকয়েকজন সহযোগী এবং অন্য গ্রুপের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি জঙ্গিদেরও আমরা নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে পেরেছি। আশা করি তাদেরকেও গ্রেফতার করতে পারবো। আশা করি জঙ্গিদের তরফ থেকে কোনো থ্রেট থাকবে না। যতবারই মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে আমরা ততবারই জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। ভবিষ্যতেও সক্ষম হবো।
কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজব মনিটরিং করার সিস্টেম আছে। আমাদের ডিবিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট এবং সিটিটিসিতে সাইবার ইউনিট আছে। অন্যান্য সংস্থারও সামাজিক মাধ্যম মনিটরিং করার সিস্টেম আছে। আমরা মনিটর করে যাচ্ছি। আশা করবো সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েও সমাজে কোনো অস্থিরতা তৈরি করতে পারবে না।
সম্মেলনের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি-র্যাব ডিজি: র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, সম্মেলন উপলক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে র্যাব। বিভিন্ন পয়েন্টে স্টাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি পেট্রোল টিম ও ডগ স্কোয়াড থাকবে। এছাড়া বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট এবং সাদা পোশাকে র্যাব সদস্যরা মাঠে কাজ করবেন। বিশেষ প্রয়োজনে কমান্ডো টিম প্রস্তুত থাকবে। আমরা আশঙ্কার কথা বলছি না। র্যাব জাতীয় যেকোনো অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে। এখানে যারা আসবেন তারা যেন নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন, বাইরের কোনো অপশক্তি এখানে ঝামেলা না করতে পারে সেই জন্য আমাদের নিরাপত্তা প্রস্তুতি।
র্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়া আমাদের ব্যর্থতা। যেহেতু এভাবে দুজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে জেলে বসে প্ল্যান করেছে। তাদের এখনো ধরতে পারিনি, কিন্তু আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত আছে, কিন্তু আমরাও আমাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। পাহাড়ি এলাকায় যে একটা জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ চলছিল, সেটা আমরা ক্যাপচার করে ফেলেছি। সুতরাং তারা তেমন কিছু করার সুযোগ পাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে কোনো অপশক্তিই কিছু করবে পারবে না।