দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম কারামুক্তি দিবস আজ। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ১০ জানুয়ারি পা রেখেছিলেন বাংলাদেশের মাটিতে। সাড়ে ৯ মাসের কারাবন্দি অবস্থায় তাকে ফাঁসি দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছিল পাকিস্তান সরকার।

বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায় ৪ হাজার ৬৮২দিন কারাভোগ করেছিলেন; যা তার জীবনের এক চতুর্থাংশ। প্রথম কারাভোগ করেছিলেন ১৯৩৮ সালে স্কুল জীবনে। ৭ দিনের জন্য। আর শেষবার বন্দি হন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানের কারাগারে। সাড়ে ৯ মাস পর ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই ৮ জানুয়ারিকে বঙ্গবন্ধুর জেলমুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে পাঠানো বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আর বঙ্গবন্ধু বন্দি থাকেন পাকিস্তানের কারাগারে। এ সময় মার্শাল ল কোর্টে বঙ্গবন্ধুর বিচারকাজ চলে। তার বিরুদ্ধে আনা ১২টি অভিযোগের ৬টিরই শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আইনজীবী দিতে চাইলেও তা নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সাজানো বিচারে রায় আগেই তৈরি। বঙ্গবন্ধুর জন্য তিনবার কবরও খোঁড়া হয়েছিল। তবে জীবীত থেকে মৃত বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালী হবে; এই ভয় থেকে তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সৈন্য যখন আত্মসমর্পণ করছিল তখনও বঙ্গবন্ধু কারাগারে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ইয়াহিয়া খান কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরাজয় বরণ করায় ফাঁসি কার্যকর হয়নি।

এরপর পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক চাপে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধু প্রথমে যুক্তরাজ্যে যান। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথ-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে বঙ্গবন্ধু যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি অর্জনের ব্যাপারে সহযোগিতা চান। এরপর ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর বিমানে চড়ে দিল্লির পানাম বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেন।

বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি নামেন বাংলার মাটিতে। মহানায়কের আগমনে পূর্ণতা পায় বাংলার স্বাধীনতা।