ভালো করছে ভ্রমণ খাতের কোম্পানিগুলো
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশের পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। মূলত আগের বছরের একই সময়ে করোনা-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জের কারণে ব্যবসা খারাপ হয়েছিল এ খাতের কোম্পানিগুলোর। সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের পুঁজিবাজারে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের চারটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। সেগুলো হলো ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, দ্য পেনিনসুলা চিটাগং লিমিটেড ও বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড।
চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের আয় হয়েছে ১১৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৫৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১৩৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৮৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৭৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আলোচ্য দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ২৩৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। মূলত করোনা-পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি স্বাভাবিক ব্যবসায় ফেরায় তাদের আয় বেড়েছে। আর এ আয় বৃদ্ধির প্রভাব কোম্পানিটির নিট মুনাফায়ও যুক্ত হয়েছে।
তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি সি পার্ল বিচ রিসোর্টের চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে পরিচালন আয় হয়েছে ১১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৫২ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির পরিচালন আয় বেড়েছে ১১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আয় বাড়ার পাশাপাশি আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৮৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৬৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১৭৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে দ্য পেনিনসুলা চিটাগংয়ের আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আয় বাড়লেও বিভিন্ন ব্যয় বৃদ্ধি ও অপরিচালন মুনাফা কমায় আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে। এ সময় কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৯৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য প্রান্তিকে নিট মুনাফা কমেছে ৭৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। মূলত সর্বশেষ প্রান্তিকে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, আর্থিক আয় হ্রাস পাওয়া, প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি ও অপরিচালন আয় কমে যাওয়ায় নিট লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে।
তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের আরেক কোম্পানি বাংলাদেশ সার্ভিসেসের চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৪৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে এ লোকসান ছিল ৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান কমেছে ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট লোকসান কমেছে ৯১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ লোকসান ছিল ১ টাকা ৭৮ পয়সা।