দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্ববাসী মহামারি করোনাভাইরাস সংকট কাটিয়ে উঠার আগেই যুদ্ধের শুরু হয়। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। যা এক পেরিয়ে দুই বছরে গড়াল। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের এক বছর পূর্ণ হলো আজ।  ২০২২ সালের আজকের দিনে (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। 

 

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছে, এই যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দুই পরাশক্তির লড়াই বিশ্বকে ঠেলে দিচ্ছে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পরমাণু চুক্তি বাতিল ও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার রুশ হুমকির পর তীব্র হচ্ছে সেই শঙ্কা।

এদিকে, যুদ্ধের দামামায় শান্তির বার্তা নিয়ে মস্কো যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। বেইজিংয়ের সমর্থনের জোরেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কো চুক্তি বাতিল করলো কি না, তা নিয়েই নতুন করে প্রশ্ন জাগছে সবার মনে।

ইউক্রেনে সর্বোচ্চ আক্রমণ চালানোর এক বছর হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি বাতিল করেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১০ সালে হওয়া ওই চুক্তির অধীনে মস্কো ও ওয়াশিংটন ১ হাজার ৫৫০টির বেশি কৌশলগত পারমাণবিক ওয়্যারহেড এবং সর্বাধিক ৭০০টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চুক্তিটি বাতিল করে রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন পারমাণবিক পরীক্ষা চালালে একই পথে হাটবে মস্কোও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ গত ৬০ বছরের যেকোনো সময়ের চেয়ে এই দুই দেশকে সরাসরি সংঘর্ষের কাছাকাছি ঠেলে দিয়েছে। চুক্তি বাতিল করে পুতিন মারাত্মক ভুল করেছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেইসঙ্গে দিয়েছেন ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ সহায়তার প্রতিশ্রুতিও।
ফলে প্রতিটি পদক্ষেপে রাশিয়া বিরুদ্ধে যাওয়ায় বেড়ে চলেছে পারমাণবিক সংঘর্ষের আশঙ্কা।

চুক্তি সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে শুধু একটি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ চ্যানেল হারিয়ে ফেলছি আমরা। যেটা পারমাণবিক ঝুঁকি বাড়ার এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।

এখানেই শেষ নয়। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের এক বছর পূর্তির আগে বিশ্বের কাছে নতুনভাবে নজরে এসেছে চীন। বুধবার চীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠকে পুতিন জানিয়েছেন, গত বছরের পরিকল্পনার মতোই এগিয়ে যাচ্ছে চীন-রাশিয়ার সম্পর্ক। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং রাশিয়ায় সফর করবেন বলেও বার্তা দিয়েছেন পুতিন। ফলে বেইজিংয়ের সমর্থনের জোরেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কো চুক্তি বাতিল করলো কি না, তা নিয়েই নতুন করে প্রশ্ন জাগছে সবার মনে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের সূত্রপাত করে। প্রায় ৮৮ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছে। আরও লক্ষাধিক মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।