অব্যাহত দরপতন, বিনিয়োগকারীদের মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচদিন দরপতন দেখলো দেশের পুঁজিবাজার। এরুপ পরিস্থিতিতে কর্মসূচি পালন করেছে বিনিয়োগকারিরা। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পূর্ব ঘোষনা মোতাবেক রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরোনো ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করেন তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক, সহ-সভাপতি মহসিন মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন শামীম, অর্থ সম্পাদক পারভেজ আলীসহ অন্যান্য বিনিয়োগকারী নেতারা।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে ১২ দফা দাবির কথা উল্লেখ আছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং অ-তালিকাভক্ত অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হারের পার্থক্য ১৫ শতাংশ করার দাবি করা হয়েছে। এছাড়া অন্যতম একটি দাবি হচ্ছে, পুঁজিবাজারের চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সহজ শর্তে অর্থাৎ ৩ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া, যা আইসিবিসহ বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ সুদে ঋণ হিসেবে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। বিনিয়োগকারিদের আরেকটি দাবি হচ্ছে, পুঁজিবাজারের সুশাসন ও স্থিতিশীলতার জন্য ভবিষ্যতে কোনো কোম্পানিকে আইপিও এর মাধ্যমে টাকা তুলতে হলে কমপক্ষে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ শেয়ার আপলোড করার বিধানের নিয়ম করা।লভ্যাংশের ওপর থেকে ট্যাক্স সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের পুরোনো এই দাবিটি আবার তুলে ধরা হয়েছে স্মারকলিপিতে।
এছাড়া পুঁজিবাজারে কারসাজি রোধে বিএসইসিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইউ এর মতো একটি নতুন ইউনিট চালু করার দাবি জানানো হয়েছে । এছাড়া পুঁজিবাজারের বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। এসময়ের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু ফ্লোর প্রাইসের ব্যাপারেস্মারকলিপিতেবলা হয়েছে যে "পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত চলমান ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখতে হবে"। পাশাপাশি ফোর্সসেল বন্ধ রাখা এবং সব ধরনের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও রাইট শেয়ার ইস্যু বন্ধ রাখার দাবি করা হয়েছে । পাশাপাশি স্বারকলিপিতে বলা হয়েছে,পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি ভালো মুনাফা করা স্বত্ত্বেও উপযুক্ত লভ্যাংশ প্রদানে গড়িমসি করে। কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করার দাবি জানান তারা।এছাড়া বলা হয়েছে, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশিত বিএসইসির ২ সিসি ধারা মোতবেক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির পরিচালকদেরকে সম্মিলিত ২০ শতাংশ ও এককভাবে নূন্যতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে বাধ্য করতে হবে।অপ্রদর্শিত অর্থ ৫ শতাংশ হারে কর প্রদান করে বিনা শর্তে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বিনিয়োগকারীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক বলেন, দুপুরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে দেশের পুঁজিবাজারে চলমান অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশনের উপর আমাদের পুরোপুরি আস্থা আছে ।বিএসইসির উপর আস্থা রেখেই ১২ দফা দাবি করেছি।
পরবর্তীতে ১২ দফা দাবি সমেতস্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিকেল ৩টার দিকে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে । এদিকে আজ সপ্তাহের প্রথম দিন বিশাল পতন দেখে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এদিন ডিএসইতে ২৮২ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৪ টির শেয়ারদর বেড়েছে। দরপতন হয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক কোম্পানির।ডিএসই থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৮২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
(দ্য রিপোর্ট,২৬শে ফেব্রুয়ারি/২০২৩)