ছোলার দামে সুবাতাস
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রোজার বাকি হাতেগোনা কয়েকদিন। প্রতিবারই রোজা আসলে দেখা যায় এই মাসের বিশেষ চাহিদা রয়েছে এমন কিছু পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। সাধারণত রমজান মাসে খেজুর,চিনি,তেল,ছোলা ও পেঁয়াজ এই ৫ টি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। বাকি ১১ মাসে যে চাহিদা রয়েছে তার প্রায় কয়েকগুন বেশি চাহিদা রমজান মাসে। রাজধানীর একাধিক পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এসব পণ্য নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন,পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের প্রয়োজন মোতাবেক পণ্য দিচ্ছেন না। অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এলসি খুলতে না পারার জন্য এই অবস্থা।
যদিও গত রবিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবারের রোজার জন্য ‘অনেক বেশি’ পণ্য মজুদ আছে"। তিনি বলেন,“বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য পেয়েছি, বিগত যেকোনো বছরের চেয়ে এ বছর সরকারের যে খাদ্য মজুদ, তার পরিমাণ অনেক বেশি"। তিনি আরো বলেন "এটা আমাদের জন্য অনেক বড় স্বস্তির"। এছাড়া, দ্রব্যমূল্য ও সরবরাহ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই উল্লেখ করে এই রবিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ছোলার দাম একটু বাড়তে পারে তবে সমস্যা হবে না। পেঁয়াজসহ অন্যগুলোর দাম ঠিক রাখতে বাজার তদারকি করা হবে। দাম বাড়তে নিলে আমদানি করা হবে। তিনি আরো বলেন, "মুরগি যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার না তবু দাম সহনীয় রাখতে সংশ্লিষ্টদের সাথে কাজ করা হবে" । চিনির দাম নিয়ে সুখবর দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমানোর অনুরোধ করছি। তারা (ব্যবসায়ীরা) আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। আশা করি রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমবে। দ্য রিপোর্ট রাজধানীর অন্যতম বড় পাইকারি বাজার মৌলভীবাজার, কারওয়ান বাজারসহ একাধিক বাজার ঘুরে রোজার চাহিদা আছে এমন পণ্যগুলোর দাম জানার চেস্টা করেছে। আজ থাকছে ছোলার দাম।
সারাদিন সিয়াম সাধনার পর শরবত,খেজুর,ছোলা,পেয়াজু এই চারটা আইটেম আমাদের দেশের নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত কম বেশি সবার ইফতার মেনু। শরবতে প্রয়োজন চিনি। যা এই বছর বাড়তি। খেজুরে হাত দেওয়াই কঠিন। প্রায় ডবল দামে বিক্রি হচ্ছে। আর ছোলার দাম গত ৩ থেকে ৪ দিন ধরে ধস নেমেছে। রোজার আগেই দাম কমতে শুরু করেছে ছোলার।মৌলভিবাজার পাইকারি বাজারে গতকাল সোমবার ছোলা বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৬৯ টাকা থেকে ৮০ টাকা। বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের অস্ট্রেলিয়ার ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। ১৫ দিন আগেও এই ছোলা বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৯০ টাকায়।আরিফ ট্রেডার্সের মালিক কালাম মহাজন বলেন, এলসি জটিলতায় ছোলা আনতে সুযোগ পাচ্ছিল কেবল বড় শিল্প গ্রুপ বা ব্যাংকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরাই। সেই ধারণা পাল্টে এখন একসঙ্গে এত ছোলা আসায় বাজার পড়ে গেছে। ফলে প্রথমে যাঁরা বিক্রি করেছিলেন তাঁরা দাম পেয়েছেন, এখন উল্টো লস হচ্ছে। তবে আগে ছোলা কিনে রাখায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি এখনো। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ছোলা।রাজধানীর বনশ্রীর ১৬ নম্বর রোডের সতেজ বাজারের দোকানদার বিল্লাল হোসেন বলেন,"আমি আগে কিনেছিলাম ৮৯ টাকা করে। এখন নাকি ৭৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর পরও আমি ৯০ টাকায় বিক্রি করছি। নতুন দামে ছোলা আনলে কম দামে বিক্রি করতে পারব"।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, "গত বছরের তলনায় এবার সব ধরণের পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গেলো দুইদিন ছোলার দাম কমার ব্যাপারে তিনি বলেন,'এইভাবে প্রতিটা পণ্যের রোজার আগে দাম কমা উচিত'।
(দ্য রিপোর্ট/মাহা/২০-০৩-২৩)