রাতের আঁধারে সাংবাদিক তুলে যাওয়া রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস:ইউট্যাব
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দৈনিক প্রথম আলোর সাভারের প্রতিনিধি শামসুজ্জামানকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তথা সিআইডি’র সদস্যরা সাদা পোশাকে তার সাভারের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের কোনো নাগরিককে কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনী এভাবে রাতের অন্ধকারে চোরাগোপ্তা কায়দায় তুলে নিয়ে যেতে পারেনা। এমনকি বা গুম করতে পারেনা। কিন্তু সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে সিআইডি পুলিশ তুলে নেওয়ার দীর্ঘ সময় পরও তার কোনো সন্ধান দেয়নি। বরং রাতের আঁধারে তার বিরুদ্ধে এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। যা অনাকাঙিক্ষত। আমরা মনে করি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই ধরনের অপতৎপরতা নাগরিকদের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শামিল।
নেতৃদ্বয় বলেন, সিআইডি’র এই ধরনের তৎপরতা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীনতারও পরিপন্থী। এসব আচরণ যে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত তাও স্পষ্ট। আসলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিশ^াস করে না তার আরেকটি উদাহরণ হলো সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়া এবং রাতের বেলায় মামলা দায়ের করা।তারা বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে দেশে মুক্তচিন্তার মানুষ ও মুক্ত সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে সরকার। এরমাধ্যমে মুক্তচিন্তা ও মুক্ত সাংবাদিকতা নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষেত্রবিশেষে তার কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। অতীতে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামসহ অনেক সাংবাদিককে নানাভাবে হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। বিরোধী মতকে দমন করতে নির্যাতন-নিপীড়নের এই ধারা এখনও অব্যাহত আছে।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা আরও বলেন, সাংবাদিক শামসুজ্জামানের প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক মিনিট পর পত্রিকার অনলাইন থেকে প্রত্যাহার ও দু:খ প্রকাশ করার পর এখন তার আটক ও হয়রানি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের আর এক ঘৃণ্য নজির হয়ে থাকবে। আমরা অবিলম্বে শামসুজ্জামানের মুক্তি দাবির পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা ও নিপীড়নমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।