শি-মাক্রো বৈঠক ফলপ্রসূ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কথা হয়েছে ফন ডেয়ার লাইয়েনের সঙ্গেও।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। আলোচনা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের সঙ্গেও। ফ্রান্স জানিয়েছে, মাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তিপ্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছেন শি।
‘আমি জানি আপনি চাইলে রাশিয়াকে বোঝাতে পারবেন এবং আলোচনার টেবিলে বসাতে পারবেন।’ ঠিক এই ভাষাতেই চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ফন ডেয়ার লাইয়েনও কার্যত এই সুরেই শিয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা চেয়েছিলেন, চীন রাশিয়ার কাজের নিন্দা করুক। কিন্তু শি তা করতে চাননি। তবে শান্তি আলোচনা যে শুরু হওয়া উচিত, সে বিষয়ে সহমত হয়েছেন শি।
গত একবছর ধরে বেজিং বার বার বলে এসেছে যুদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান পক্ষপাতহীন। কোনো পক্ষকেই তারা সমর্থন করছেন না। কিন্তু সম্প্রতি ক্রেমলিনের সঙ্গে বেজিংয়ের বন্ধুত্ব বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন শি। পুতিনকে শি বলেছেন, গত একশ বছরে বিশ্ব রাজনীতি এমন পরিবর্তন দেখেনি। গত কয়েকবছরে যা বদলাতে শুরু করেছে। স্পষ্টভাবেই চীনের ক্ষমতাবৃদ্ধি এবং আমেরিকার সঙ্গে চীনের দূরত্বের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শি। পুতিনও জানিয়েছিলেন, বেজিং ক্রেমলিনের কৌশলগত কমরেড।
এই পরিস্থিতিতেই মাক্রোঁর বেজিং সফর। ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে। ফন ডেয়ার লাইয়েনের সঙ্গেও এবিষয়ে শিয়ের কথা হয়েছে। কীভাবে বাণিজ্যের উন্নতি সম্ভব, তা নিয়ে কথা হয়েছে। চীনের সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কমানোর রাস্তাও খোঁজা হয়েছে।
তবে বিবৃতিতে ফ্রান্স এবং চীন দুই দেশই জানিয়েছে, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ইউক্রেনে শান্তি আলোচনা চায় সব তরফই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটাই ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বড় জয়।
মাক্রোঁ আরো একটি বিষয়ও উল্লেখ করেছেন। কোনোভাবেই যেন কোনো দেশ এই পরিস্থিতিতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা না ভাবে। শি এই বিষয়টিও সমর্থন করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের অন্য অংশ অবশ্য মাক্রোঁ-শি বৈঠককে ঐতিহাসিক বলতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, আলোচনা হলেও চীন এখনই তাদের অবস্থান বদলে ফেলবে, এমনটা ভাবার কারণ নেই। বলা যেতে পারে, চীন সব দিকের রাস্তাই যথাসম্ভব খুলে রাখছে। বস্তুত, তাইওয়ান সীমান্তে চীনের যুদ্ধজাহাজ পাঠানো নিয়ে এদিন মাক্রোঁ বা লাইয়েনের সঙ্গে শিয়ের কোনো আলোচনা হয়নি। এবিষয়ে ইইউ-র প্রতিনিধিরা কথা তোলেননি।