দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:রাজধানীর বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আগামী বুধবার (১২ এপ্রিল) থেকে চৌকি বিছিয়ে অস্থায়ীভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। আগামীকাল সোমবারের (১০ এপ্রিল) মধ্যে ভুক্তভোগীদের তালিকাও শেষ করা হয়ে যাবে।

নগর ভবনে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, বঙ্গবাজারের পোড়া স্তূপ পরিষ্কার করার কার্যক্রম সোমবার সকাল থেকে পুরোদমে শুরু হবে, যাতে দুয়েকদিনের মধ্যে সেখানে ব্যবসা পরিচালনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আমরা আশা করছি, আগামী মঙ্গলবারে না হলেও বুধবার থেকে যেন ব্যবসায়ীরা সেখানে চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এজন্য জায়গাটি পরিষ্কার করার পরে সমতল করা হবে। ডিএসসিসি সেই ব্যবস্থা করবে। তারপর ব্যবসায়ীরা চৌকি বিছিয়ে সেখানে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও মালিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো প্রণয়ন করা যায়নি জানিয়ে মেয়র তাপস আরও বলেন, আমরা আশা করছি আগামীকালের মধ্যে এটি শেষ করতে পারব। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় যে তহবিল করা হয়েছে সেখানে ইতোমধ্যে ২ কোটি টাকা জমা হয়েছে। সব মহল থেকেই আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। তহবিলে আমরাও অংশগ্রহণ করবো। যাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসিত হতে পারে। মঙ্গলবার আমাদের করপোরেশন সভা আছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ সময় সমাজের সব স্তরের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, আমরা সবার কাছে আবেদন করছি, মানবিক দিক বিবেচনা করে যাতে সবাই এগিয়ে আসে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এ তহবিলে যেন সবাই অংশগ্রহণ করে। এটা যেহেতু রমজান মাস, তাই মানবতার খাতিরে সকলেই যেন এগিয়ে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত অনুদানের ব্যবস্থা করবেন। আমরা আশাবাদী, যেভাবে আমরা সাড়া পাচ্ছি তাতে অচিরেই, হয়তো বা এই সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রূপ আমরা দিতে পারব। সকলে মিলে তহবিল গঠন করবে। এতে আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

ঢাকা-৮ আসেনর সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও মার্কেট কমিটিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে। তারা যেন অস্থায়ীভাবে বসে ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা হচ্ছে। তহবিল যেটা হচ্ছে, সবাই আশাবাদী যে এটা একটা বড় আকার ধারণ করবে। আর প্রধানমন্ত্রী এর সাথে যখন যুক্ত হবেন তা সবার জন্যই একটি বড় ধরনের সহায়তা হবে বলে আমরা আশা করি।

এ সময় বারবার অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাই মিলে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করতে হবে। এখানে সরকার ও সিটি করপোরেশনের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি যারা মার্কেট পরিচালনা করেন তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। প্রতিটি মার্কেটে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন, মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান, মহানগরী ইউনিটের সভাপতি মো. লোকমান খান, মহানগর কমপ্লেক্সের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মো. শাকিল, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।