দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সূচকের মিশ্র অবস্থায় লেনদেন চলছে। গত বছরের দীর্ঘপতনের ধারা থেকে বের হয়ে এ বছর অনেকটা উত্থান-পতনে চলছে দেশের পুঁজিবাজার। এদিকে দেশে জমে উঠছে নির্বাচনী ময়দান। নির্বাচন কমিশনের পূর্ব ঘোষনামতে চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির মাঠের লড়াই জমে উঠেছে। দেশের অন্যতম প্রধান বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) টানা কর্মসূচি পালন করছে। এমনকি রোজার মধ্যেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। আগাম ঘোষনা দিয়ে রেখেছে নির্বাচন অংশ না নেওয়ার। অন্যদিকে সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করছে। প্রস্ততি হিসেবে আওয়ামী লীগও মাঠে সরব। নির্বাচন বিষয়ে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানের দেশের বৃহৎ দুই দল। এরুপ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারিদের আতঙ্ক রয়েছে রাজনৈতিক কোন সংঘাতে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার। তবে বিনিয়োগকারীদের এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়াম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, "নির্বাচনী এই বছরে সূচক ৭ হাজার পয়েন্টে নিয়ে যাবো"। এই ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী বিএসইসি চেয়ারম্যান।

দেশের পুঁজিবাজাররের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে দ্য রিপোর্টের সাথে একান্ত আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা। যার যার জায়গা থেকে পজিটিভ ভূমিকা নিলে পুঁজিবাজার আরো ভালো অবস্থায় যাবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশ সঠিক পথে আছে। এভাবে এগুতে থাকলে উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারবো। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় লেনদেন শেষ হয়েছিলো। তবে সপ্তাহ শেষে এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন সাড়ে ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধনও। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গেলো সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসই এক্স ৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১৪ পয়েন্টে। প্রধান সূচক বাড়লেও ডিএসইর অপর দুই সূচক কমেছিলো গত সপ্তাহে। বাছাই করা ৩০ কোম্পানির সূচক ডিএস ৩০ সূচক ১০ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট হারিয়েছে গত সপ্তাহে । শরীয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএসই এস সূচক কমেছে ১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট। সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে টাকার অংকে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। গেলো সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে ২ হাজার ৮৯৩ কোটি ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৮৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এর আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৩ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ২৫৪ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার ১৫২ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৪৫ কোটি ৬৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৯১১ কোটি ৯৮ লাখ ৫৬ হাজার ১৫১ টাকায়।

এদিকে গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনে (রোববার) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে শূন‌্য দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছিলো। আজ (সোমবার)ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে, ডিএস৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে মোট ৩১১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টি কোম্পানির। এছাড়া দরপতন হয়েছে ৮৮টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর।

(দ্য রিপোর্ট/ মাহা/ ১০ই এপ্রিল,২০২৩)